
ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। প্যাট্রিয়টসহ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একের পর এক ব্যর্থ হচ্ছে রাশিয়ার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার সামনে। ইউক্রেনের আকাশে রুশ ড্রোনের গর্জনে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পর্যন্ত আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন এমন চিত্র উঠে আসছে সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে।
রুশ সেনারা সমুদ্রপথে সাবমেরিন, স্থলপথে ট্যাংক আর আকাশপথে ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে একাধিক ফ্রন্টলাইনে আধিপত্য বিস্তার করেছে। পেন্টাগনের কর্মকর্তারাও বলছেন, এটি শুধু ইউক্রেন যুদ্ধ নয় এটি রাশিয়ার দখলদারিত্বের এক নতুন অধ্যায়।
এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট পুতিন গড়ে তুলেছেন এক বিপজ্জনক ত্রিভুজ জোট চীন, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া। প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতায় তারা দ্রুত একত্রিত হচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের একচ্ছত্র আধিপত্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ব্যবহার করে রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে চেয়েছিল, কিন্তু উল্টো ইউক্রেনই আজ ধ্বংসের পথে। মার্কিন জনগণ প্রশ্ন তুলছে “আমাদের টাকায় অন্য দেশের যুদ্ধ কেন?” একদিকে ইউক্রেনের ওপর সাইবার হামলা ও মনস্তাত্ত্বিক অপারেশন চালিয়ে নেতৃত্বকে দুর্বল করছে রাশিয়া, অন্যদিকে পুতিন নিজেই যুদ্ধের চালক ও কৌশলী খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে শান্তি ফেরাতে বারবার চেষ্টা করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে পুতিনের শর্তের সামনে তিনি বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন। পুতিন দাবি করছেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে না নেওয়া এবং দখলকৃত অঞ্চলগুলো মস্কোর হাতে তুলে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
গত দুই সপ্তাহে যুদ্ধের গতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হয়েছে। ট্রাম্প সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এবার রুশ জ্বালানি খাতকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন। পাশাপাশি চীন ও ভারতকেও সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখলে তাদের ওপরও বসানো হবে বাড়তি শুল্ক।
এই হুমকির জবাবে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, “এটি হবে ওয়াশিংটনের সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা।”
এদিকে ন্যাটোর বাজেট বাড়ানোর পাশাপাশি, ইউরোপীয় দেশগুলোকে সামরিক প্রস্তুতি নিতে চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প। ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে ন্যাটো সদস্যদের রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে, যা বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার সামুদ্রিক সীমান্তের কাছে, যা বিশ্লেষক ও সংবাদমাধ্যমগুলো “ট্রাম্পের যুদ্ধ ঘোষণা” বলেই ব্যাখ্যা করছে।
Jahan