ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

ইউরোপে যাবেন পড়াশোনার জন্য? এই ৭টি দেশ আপনাকে দিবে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ১৭ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৬:৪৩, ১৭ জুলাই ২০২৫

ইউরোপে যাবেন পড়াশোনার জন্য? এই ৭টি দেশ আপনাকে দিবে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি

ছবিঃ সংগৃহীত

অনেক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে তারা যেই দেশে পড়াশোনা করছেন, সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করার। উন্নত জীবনযাপন, স্থায়িত্ব, ও কর্মজীবনের সুযোগ এই আকাঙ্ক্ষার মূল কারণ। তবে সব দেশে পড়াশোনার পর স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ সহজ নয়। তবে ইউরোপের কিছু দেশ এই পথটিকে অনেক সহজ করেছে।

এখানে ইউরোপের এমন সাতটি দেশ তুলে ধরা হলো, যেখানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, বিশেষ করে নাইজেরিয়া এবং অন্যান্য আফ্রিকান দেশের শিক্ষার্থীরা তুলনামূলকভাবে সহজেই স্থায়ী বসবাসের অনুমতি (Permanent Residency) পেতে পারেন:

১. ফ্রান্স
বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চমানের শিক্ষা এবং বিদেশি প্রতিভার জন্য খোলা সুযোগের জন্য ফ্রান্স খুবই জনপ্রিয়।
পড়াশোনা শেষে, শিক্ষার্থীরা "অস্থায়ী রেসিডেন্স পারমিট (APS)" এর জন্য আবেদন করতে পারেন, যা তাদের ২৪ মাস পর্যন্ত চাকরি খোঁজার বা ব্যবসা শুরু করার সুযোগ দেয়।
এই সময়ের মধ্যেই যদি চাকরি মেলে বা দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান হয়, তবে PR পাওয়ার পথ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।

২. জার্মানি
বিনা টিউশন ফি-তে উচ্চশিক্ষা এবং শক্তিশালী অর্থনীতি—জার্মানিকে স্থায়ী বসবাসের জন্য জনপ্রিয় করে তুলেছে।
পড়াশোনার পর শিক্ষার্থীরা ১৮ মাসের "জব সিকার ভিসা" পেতে পারেন চাকরি খোঁজার জন্য।
চাকরি পাওয়ার পর, তারা ওয়ার্ক ভিসা বা EU ব্লু কার্ড পেতে পারেন, যা দ্রুত PR পাওয়ার পথ খুলে দেয়।
নিয়মিত চাকরি এবং জার্মান ভাষার দক্ষতা থাকলে, মাত্র ২১ থেকে ৩৩ মাসের মধ্যেই স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া সম্ভব।

৩. যুক্তরাজ্য
UK-তে গ্র্যাজুয়েটরা Graduate Route Visa এর মাধ্যমে ২ বছর (PhD হলে ৩ বছর) পর্যন্ত কাজ করতে পারেন, কোনো স্পনসর ছাড়াই।
এই সময়ে চাকরির অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ থাকে এবং পরে Skilled Worker Visa এর মাধ্যমে ILR (Indefinite Leave to Remain) আবেদন করা যায়।
ধারাবাহিক চাকরি থাকলে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়া সম্ভব।

৪. নরওয়ে

  • নরওয়ে স্থায়ী বসবাসের দিক থেকে অন্যতম সহজ পথ প্রদান করে।
  • ডিগ্রি শেষ করার পর, শিক্ষার্থীরা চাকরি খোঁজার জন্য রেসিডেন্স পারমিট বাড়াতে পারেন।
  • চাকরি পেলে ওয়ার্ক পারমিট নেওয়া যায় এবং PR-র জন্য সময় গণনা শুরু হয়।
  • মাত্র ৩ বছরের টানা বৈধ বাসস্থান, ভাষা পরীক্ষা এবং অপরাধমুক্ত জীবনযাপন থাকলেই PR এর জন্য আবেদন করা যায়।

৫. আয়ারল্যান্ড
আয়ারল্যান্ডে PR পাওয়ার জন্য চারটি ধাপে এগোতে হয়:

  • স্টুডেন্ট ভিসায় পড়াশোনা শেষ করা
  • Third Level Graduate Programme-এ অংশগ্রহণ করে ১–২ বছর পূর্ণকালীন চাকরি
  • দীর্ঘমেয়াদি চাকরি পেলে একাধিক ধরনের ওয়ার্ক পারমিটের (যেমন Critical Skills বা General Employment Permit) জন্য আবেদন
  • ৫ বছর বৈধ বাসস্থানের পর PR এর জন্য আবেদন
  • বিশেষ করে প্রযুক্তি ও ফাইন্যান্স সেক্টরে কাজের সুযোগ বেশি থাকায় এটি নাইজেরিয়ানদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য।

৬. ফিনল্যান্ড

  • বিশেষ করে প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ফিনল্যান্ড।
  • পড়াশোনার পর শিক্ষার্থীরা ২ বছরের রেসিডেন্স পারমিট পেতে পারেন চাকরি বা ব্যবসা খোঁজার জন্য।
  • চাকরি পেলে ওয়ার্ক-ভিত্তিক রেসিডেন্স পারমিট নেওয়া যায়।
  • টানা ৪ বছরের বৈধ বাসস্থান, ভাষা দক্ষতা ও আর্থিক স্থিতিশীলতা থাকলে PR এর জন্য আবেদন করা যায়।

৭. ডেনমার্ক
ডেনমার্কে PR পাওয়ার দুটি পথ রয়েছে:

  • স্ট্যান্ডার্ড পথ: ৮ বছর বৈধ বাসস্থান
  • দ্রুত পথ (Fast-track): ৪ বছরেই PR যদি নিচের শর্তগুলো পূরণ করেন:
  • Danish Language Test 3 পাস
  • অন্তত ৪ বছর পূর্ণকালীন চাকরি
  • Active Citizen Exam বা সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ
  • নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় অর্জন
  • ডেনমার্ক সামাজিক সংহতি, ভাষা শিক্ষা ও চাকরিতে স্থায়িত্বকে মূল্য দেয়। যারা সত্যিই একীভূত হতে চান, তাদের জন্য এটি আদর্শ।


ইউরোপের এই দেশগুলো শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষা নয়, বরং স্থায়ী বসবাসের দিক থেকেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবসম্মত স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেয়।
 

 
 

মারিয়া

আরো পড়ুন  

×