ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

ইউক্রেনকে যুদ্ধাস্ত্র উপহার দিচ্ছে ট্রাম্প মন্তব্যের বিরোধিতা ইউরোপী ইউনিয়নের, ইউরোপ বলছে, "যুদ্ধ উপহার নয়, দায়িত্ব"

প্রকাশিত: ১৮:১৯, ১৭ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৮:২১, ১৭ জুলাই ২০২৫

ইউক্রেনকে যুদ্ধাস্ত্র উপহার দিচ্ছে ট্রাম্প মন্তব্যের বিরোধিতা ইউরোপী ইউনিয়নের, ইউরোপ বলছে,

ছবিঃ সংগৃহীত

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য—যা অনুযায়ী ইউক্রেনকে অতিরিক্ত অস্ত্র সহায়তা তিনি দিচ্ছেন, অথচ খরচ বহন করছে ইউরোপ—এই বক্তব্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কিছুটা জটিল করে তুলেছে।

ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কাল্লাস বুধবার বলেন, “যদি আপনি অস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু বলেন অন্য কেউ এর জন্য টাকা দেবে—তাহলে সেটা সত্যিকার অর্থে আপনার দেওয়া হয় না, তাই না? আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই, তবে ইউক্রেনকে সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রকেও সমান বোঝা বহন করতে হবে।”

ইউক্রেনের জন্য প্রতিরক্ষা জোট
রয়টার্স জানায়, আগামী সপ্তাহে ইউক্রেন ও প্যাট্রিয়ট মিসাইল সিস্টেম দাতাদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে, যার নেতৃত্ব দেবেন ন্যাটোর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার। এর উদ্দেশ্য, ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদার করা।

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত কার্ট ভোলকার বলেন, ইউক্রেনকে মোট ১২ থেকে ১৩টি প্যাট্রিয়ট সিস্টেম দেওয়া হতে পারে, তবে এতে এক বছর সময় লেগে যেতে পারে।

ট্রাম্প এক বক্তব্যে বলেন, এক দেশ ১৭টি প্যাট্রিয়ট সিস্টেম রাখে—কিছু সরাসরি ইউক্রেনে যাবে। কিন্তু বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোনো ন্যাটো সদস্যের কাছে এত বেশি প্যাট্রিয়ট নেই।

ইউক্রেনের অস্ত্র উৎপাদনে নতুন লক্ষ্য
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, “আমাদের লক্ষ্য—পরবর্তী ছয় মাসে ইউক্রেনে ব্যবহৃত অস্ত্রের ৫০% নিজ দেশে তৈরি করতে হবে।”

বর্তমানে এই হার ৪০%। নতুন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ঘরোয়া অস্ত্র উৎপাদন বাড়াতে হবে বলে জানান তিনি। ড্রোন ও এয়ার ডিফেন্স তৈরিতে ইতিমধ্যেই অগ্রগতি হয়েছে।

জেলেনস্কি আরও বলেন, “আমরা এমন ড্রোন ইন্টারসেপ্টর বানাতে চাই যা শত্রুপক্ষের ড্রোন হানাকে ঠেকাতে সক্ষম হবে।”

রাশিয়ার হামলা: আবারও বেসামরিক এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ
রাশিয়ান বাহিনী বুধবার ডোনেস্ক অঞ্চলের ডব্রোপিলিয়াতে একটি বাজার ও শপিং সেন্টারে বোমা ফেলে—যেখানে দুজন নিহত এবং অন্তত ২৭ জন আহত হন।
একটি ৫০০ কেজি বোমা বিকেল ৫:২০ মিনিটে ফেলা হয়, যখন লোকজন কেনাকাটা করছিল।
জেলেনস্কি একে বলেন, “এটা কোনো সামরিক হামলা নয়—এটা নিছকই সন্ত্রাস। রাশিয়ার স্ট্রাইকগুলোর কোনো সামরিক যুক্তি নেই, শুধু মানুষের প্রাণ নিতে চায়।”

এর আগে রাতভর চারটি শহরে রুশ বাহিনী ৪০০টি ড্রোন এবং একটি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়ে আঘাত হানে। মূল টার্গেট ছিল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি স্থাপনা।

ইউক্রেন বলছে, শান্তি আলোচনার দরজা খোলা
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিই সিবিহা বলেছেন, “আমরা সবসময় শান্তি আলোচনায় প্রস্তুত। রাশিয়া যে বলছে আমরা চাই না—তা মিথ্যা, প্রপাগান্ডা।”
তিনি ইইউ-কে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ পাস করার আহ্বান জানান। কিন্তু স্লোভাকিয়ার আপত্তিতে ১৮তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ আটকে আছে।

ডিজিটাল যুদ্ধ: সোশ্যাল মিডিয়ায় রাশিয়ার ভুয়া মতামতের প্রচার
আটলান্টিক কাউন্সিল এবং ওপেনমাইন্ডস নামের একটি সংস্থা এক রিপোর্টে জানায়—রাশিয়ার বট নেটওয়ার্ক ইউক্রেনের রুশ-অধিকৃত অঞ্চলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে।

অসংখ্য ‘ডিসপোজেবল’ বা অস্থায়ী অ্যাকাউন্ট থেকে আজব মন্তব্য ছড়ানো হচ্ছে। অনেক সময় এদের নামও অর্থহীন। ধারণা করা হচ্ছে—এগুলো জেনারেটিভ এআই দিয়ে তৈরি।

একটি বট মন্তব্যে লিখেছে, “পুতিন শান্তিপূর্ণ অস্ত্র ব্যবহারে বিশ্বাস করেন—এটা তো দারুণ!”

তথ্যসূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

 
 

মারিয়া

×