
নাটোরের লালপুরে সেনাবাহিনীর ১২ঘন্টার টানা অভিযানে বিপুল পরিমাণে দেশী-বিদেশী অস্ত্র, গোলাবারুদ, মাদক, নগদ টাকা, মাথার খুলিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদী সংলগ্ন মোল্লাপাড়া চর এলাকায় যৌথ বাহিনী বালু মহল নিয়ে অপরাধ দমনে অভিযান চালায় বলে জানিয়েছেন, নাটোরের পুলিশ সুপার, মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন।
এসময় সেনারা একটি পাকিস্তানি রিভলবার, একটি ভারতীয় পিস্তল, একটি ডাবল ব্যারেল শাটার গান, ২৯ রাউন্ড ৭.৬৫ মিমি গুলি, নয় রাউন্ড .২২ মিমি গুলি, একটি ৭.৬৫ মিমি এফসিসি, একটি ১২ মিমি গেজেট শেল, ১৭টি দেশীয় রামদা, একটি সুইস নাইফ, ৮৬ পিস ইয়াবা, পাঁচ বোতল ফেন্সিডিল, দুইটি গাঁজার গাছ ও ৬ গ্রাম গাঁজা, মাদক সেবনের উপকরণ, নগদ ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৩১২ টাকা, চারটি স্মার্ট ফোন, পাঁচটি বাটন ফোন, পাম্প, জেনারেটর, ক্রেডিট-ডেবিট কার্ড ও ব্যাংক চেক, এনআইডি কার্ড, তিনটি নৌকা এবং একটি মানুষের খুলি উদ্ধার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন কাকন গ্রুপের সদস্য মঞ্জুরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম বাপ্পি (২৮), মেহফুজ হক সোহাগ (৩৯), এবং ভাষানের স্ত্রী মোছাঃ রোকেয়া।
সেনা সূত্র জানায়, সন্ত্রাসী সংগঠন কাকন গ্রুপের ঘাঁটির উপরে সকাল থেকে টানা ১২ ঘন্টা সেনাবাহিনী, নৌ পুলিশ ও পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। লালপুর পদ্মার চড় অঞ্চলে কাকন গ্রুপের অত্যাচারে নিষ্পেশিত ছিল সাধারন জনগন। কৃষকদের মারধর করে ফসল কেড়ে নেওয়া, জেলেদেরকে অস্ত্র ঠেকিয়ে মাছ ছিনিয়ে নেওয়া, প্রতিটি বালুবাহী নৌকা থেকে চাদাবাজি, এবং পদ্মার চরে ত্রাস, সন্ত্রাস সৃষ্টি করা ছিলো কাকন বাহিনীর প্রতিদিনের কাজ। বিপুল পরিমাণে দেশী-বিদেশী অস্ত্র, গোলাবারুদ, মাদক, নগদ টাকা, মাথার খুলিসহ তাদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা সদস্যরা কাকন বাহিনীর কাছে ঘুষ নিয়েছে গ্রেপ্তারদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, “নামগুলো আমরা উড়িয়ে দিচ্ছিনা। নামগুলো কারা লিখছে এগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। কিছু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, কিছু সাংবাদিক, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, সবগুলো লিস্ট আমাদের কাছে আসছে। বিভাগীয় তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে দোষী প্রমাণিত হলে।“
মাথার খুলি উদ্ধারের বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “ওখানেতো অভয়ারণ্য ছিল। দীর্ঘদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওখানে যায়ওনি, যেতেও পারেনি। সেটাকে ওভারকাম করার জন্য মূলত আমরা ধাক্কা দিছি। এই অভিযানটা আর চলবে। তখন বোঝা যাবে বিষয়টা কি দাঁড়ায়।
মূলত বালুমহালের আধিপত্য নিয়ে অপরাধ ও সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি হয়েছিল বলে জানান, জেলার শীর্ষ ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
Jahan