
প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে সুরিমি পণ্য
মাছের পেস্ট বা কিমা থেকে তৈরি ‘সুরিমি’ পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে প্রোটিনের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) অনুষ্ঠিত একটি গবেষণা প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে গবেষকরা এই তথ্য জানান।
সকালে সিভাসু অডিটরিয়ামে ‘ডেমোনেস্ট্রেশন ওয়ার্কশপ ও ফুড ফেয়ার’ শীর্ষক উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রকল্পের অধীনে উৎপাদিত সুরিমিভিত্তিক বিভিন্ন খাদ্যপণ্য যেমন- ফিশ বল, ফিশ কেক, ফিশ রোল, ফিশ নাগেট, ফিশ বার্গার এবং ফিশ কাবাব প্রদর্শন করা হয়। উপস্থিত সবাই সুরিমিভিত্তিক এই খাদ্যপণ্যসমূহ উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ওপর প্রেজেন্টেশন দেন সিভাসু’র কোষাধ্যক্ষ এবং প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো. কামাল। তিনি গবেষণা কার্যক্রম বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মাছের মাথা, কাঁটা ও আবর্জনা বাদ দিয়ে যে অংশ থাকে তা দিয়ে যে পেস্ট বা কিমা তৈরি হয় তাকে সুরিমি বলে। এই সুরিমি দিয়ে শিঙ্গাড়া, সমুচা, ফিশ বল, ফিশ কেক, ফিশ বার্গার, ফিশ রোলসহ নানা মুখরোচক খাবার তৈরি করা যায়।
জাপান, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের মতো দেশে এটি বহুদিন ধরে জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে এখনো এটি একটি নতুন ধারণা। তিনি আরও বলেন, মাছের পেস্ট বা কিমা থেকে তৈরি সুরিমি পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে প্রোটিনের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব। এছাড়া, এর মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।
সিভাসু’র পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) প্রফেসর ড. মো. ইউসুফ এলাহী চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফিশারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শেখ আহমাদ আল নাহিদ, মৎস্য অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন এবং মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ দপ্তর, চট্টগ্রামের উপপরিচালক ড. মঈন উদ্দিন আহমদ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সিভাসু’র ফিশিং ও পোস্ট-হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. ফয়সাল। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রকল্পের সহকারী প্রধান গবেষক ও হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক চয়নিকা প-িত।
সিভাসু উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, সিভাসুতে ফিশারিজ অনুষদের যাত্রার শুরু থেকে আমরা অনবরত দেশের মৎস্য সেক্টরের উন্নয়নে শিক্ষা এবং গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। আমরা চাই এই দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। আমরা চাই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে এবং মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে। আমরা যদি সুষম প্রোটিন নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে কখনোই একটি সুস্থ, সবল এবং মেধাবি জাতি গঠন করতে পারব না। বিশ্ববিদ্যালয়, মৎস্য অধিদপ্তর এবং ফিশিং ট্রলার মালিকদের সমন্বয়ে একযোগে কাজ করলে এই প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, মাছ ধরার ট্রলার ও সুপার চেইনের প্রতিনিধিবৃন্দ, মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা , সিভাসু’র শিক্ষক এবং প্রজেক্ট টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় এবং উপকূলীয় অঞ্চলে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে টেকসই উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক মৎস্য প্রকল্প, মৎস্য অধিদপ্তরের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়।
প্যানেল হু