
ছবি: সংগৃহীত
বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে নতুন নীতিগত পরিবর্তন এনেছে নিউজিল্যান্ড সরকার। আগামী ২০৩৪ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষাখাতের আয় দ্বিগুণ করে ৭.২ বিলিয়ন নিউ জিল্যান্ড ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এই লক্ষ্য পূরণে বাড়ানো হয়েছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাজের সময়সীমা এবং সম্প্রসারিত করা হয়েছে কাজের সুযোগ।
শিক্ষামন্ত্রী এরিকা স্ট্যানফোর্ড জানিয়েছেন, ২০২৩ সাল থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি সংখ্যা নিয়মিতভাবে বাড়ছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে এবং আরও গতি দিতে সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক শিক্ষাখাত নিউজিল্যান্ডের অর্থনীতিতে বছরে ৩.৬ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখে। নতুন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৮৩,৭০০ থেকে বাড়িয়ে ১,০৫,০০০ এবং ২০৩৪ সালের মধ্যে তা ১,১৯,০০০ করা হবে।
নতুন নীতির আওতায় এখন থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৫ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন। এছাড়াও, অনুমোদিত এক্সচেঞ্জ বা স্টাডি অ্যাব্রড প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া সকল তৃতীয় স্তরের (tertiary-level) শিক্ষার্থীদের কাজের অনুমতি দেওয়া হবে।
এই পদক্ষেপটি এমন এক সময় নেওয়া হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় শিক্ষা গন্তব্যগুলো বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য কঠোর নীতি গ্রহণ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন চীনা শিক্ষার্থীদের ওপর বিশেষ নজরদারি চালিয়েছিল এবং মে মাসে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষমতা বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছিল, যদিও পরে আদালত তা স্থগিত করে। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া ২০২৫ সালের জন্য নতুন বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ২৭০,০০০-এ সীমাবদ্ধ করেছে, কারণ দেশটিতে আবাসন সংকট এবং পরিকাঠামোগত চাপ বেড়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে নিউজিল্যান্ডের এই উদারনীতি একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা তৈরি করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার মতো অঞ্চলগুলোকে লক্ষ্য করে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ প্রচারণা চালানো হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তবে বিশাল এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। পর্যাপ্ত আবাসন, শিক্ষার্থীদের সহায়তা ব্যবস্থা এবং শ্রমবাজারে অন্তর্ভুক্তির মতো বিষয়গুলো সমানভাবে গুরুত্ব পাবে। এর পাশাপাশি ডিজিটাল নোম্যাড এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য ভিসা সংস্কারও অর্থনীতিকে আন্তর্জাতিকভাবে খোলা রাখার সরকারের সামগ্রিক কৌশলের অংশ।
যদি পরিকল্পনা সফল হয়, তবে এটি নিউজিল্যান্ডকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় উচ্চশিক্ষা গন্তব্যে রূপান্তরিত করতে পারে, যেখানে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার কঠোর নীতির ফলে অনিশ্চয়তায় পড়া শিক্ষার্থীরা নতুন সুযোগ খুঁজে পাবে।
মুমু ২