
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের বিমান হামলায় রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ইরানের কোম প্রদেশ। দখলদারদের বর্বর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন শত শত সাধারণ মানুষ, রেহাই পায়নি শিশুরাও। ঠিক এমন এক ভয়াবহ হামলায় নিহত হয়েছেন ১৬ বছর বয়সী এহসান কাসেমী।
শোকাহত পরিবারগুলো যখন সন্তানের হারানোর বেদনায় মূর্ছা যাচ্ছেন, তখনই এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এহসানের বাবা-মা। নিহত সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চিত অর্থ তারা স্বেচ্ছায় দিয়ে দিলেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে, যাতে ওই অর্থ ব্যবহার করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়।
কোম প্রদেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সরাসরি সম্প্রচারে এহসানের বাবা ঘোষণা করেন, তাদের ছেলের পড়াশোনা ও ভবিষ্যতের জন্য জমিয়ে রাখা হাজার হাজার ডলার এখন থেকে ইরানের মিসাইল প্রকল্পে খরচ করা হবে। তার ভাষায়, ‘এই অর্থ দিয়ে হয়তো একটি বা দুটি মিসাইল তৈরি হবে। একদিন সেই মিসাইলই তেল আবিবকে কাঁপিয়ে দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হলো শহীদদের রক্তের ঋণ সামান্য হলেও পরিশোধ করা এবং দেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।’
গত ২০ জুন ভোররাতে কোম প্রদেশের সালারিয়ে জেলার একটি চারতলা ভবনে ইসরায়েল বিমান হামলা চালায়। ওই ভবনেই ছিলেন ১৬ বছরের এহসান কাসেমী। একই হামলায় নিহত হন ইরানের আইআরজিসির (ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড) কুদস ফোর্সের ফিলিস্তিনি শাখার প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাঈদ ইজাদী। ইরানে তিনি হাজ রমজান নামে পরিচিত ছিলেন।
এর আগে ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে উসকানিমূলক বিমান হামলা চালায়, যাতে নিহত হন বহু পরমাণু বিজ্ঞানী ও সামরিক কর্মকর্তা। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান মুখ বুঁজে বসে থাকেনি। পাল্টা হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলের কৌশলগত স্থাপনায় ভয়াবহ মিসাইল হামলা চালায়। এমনকি কাতারে অবস্থিত মার্কিন আল-উদাইদ সেনাঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়।
ইরানের কড়া জবাবের মুখে ২৪ জুন যুদ্ধবিরতিতে আসে দুই দেশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি আসলে ইসরায়েলের কৌশলগত পরাজয়ের একটি ইঙ্গিত।
এহসানের বাবা-মায়ের এই আত্মত্যাগ শুধুই একটি অর্থ দান নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে দখলদারদের বিরুদ্ধে অদম্য প্রতিরোধের প্রতীক। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করার এমন উদাহরণ অনুপ্রেরণা যোগাবে ইরানের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=H8UIi_wSEfg&t=7s
রাকিব