ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

ট্রাম্পের হাতে আটক প্যালেস্টাইনপন্থীর ২০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৩৮, ১১ জুলাই ২০২৫

ট্রাম্পের হাতে আটক প্যালেস্টাইনপন্থীর ২০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে 'অন্যায়ভাবে আটক' ও 'নাম কলঙ্কিত করার' অভিযোগে ২০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেছেন প্যালেস্টাইনপন্থী ছাত্র মাহমুদ খালিল। নিউইয়র্ক শহরে বসবাসকারী এই সাবেক ছাত্র আন্দোলনকারী একসময় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালেস্টাইনপন্থী প্রতিবাদ-আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র ছিলেন।

মাহমুদের অভিযোগ, ২০২৫ সালের মার্চে তাকে গোপনে আটক করে নিউইয়র্ক থেকে লুইজিয়ানার লা সাল ডিটেনশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তার গর্ভবতী স্ত্রী একটি ভিডিও ধারণ করেন, যেখানে দেখা যায় সাদা পোশাকের ICE এজেন্টরা তাকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনার পরপরই মাহমুদের আইনজীবীরা তার অবস্থান সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলেন, ফলে আইনগত পদক্ষেপ নিতে বিলম্ব হয়। মাহমুদের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ আনেনি কর্তৃপক্ষ, তবে তাকে ‘জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করে ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন আইনের একটি অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে নির্বাসনের চেষ্টা করা হয়।

মাহমুদের আইনি আবেদন অনুযায়ী, তাকে রাজনৈতিকভাবে টার্গেট করে আটকের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। খালিল জানান, তার মামলার মূল উদ্দেশ্য হলো রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো এবং ভবিষ্যতে অন্যদের হয়রানি থেকে রক্ষা করা।

ট্রাম্প প্রশাসনের ভাষ্য ছিল ভিন্ন। মাহমুদের বিরুদ্ধে হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগ তুলে ট্রাম্প তাকে “র‍্যাডিকাল প্রো-হামাস ছাত্র” এবং “সন্ত্রাসবাদ-সহানুভূতিশীল” বলে অভিহিত করেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মাহমুদ এমন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন যা “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”

তবে আদালতে এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি প্রমাণিত হয়নি। ২০২৫ সালের ২০ জুন নিউ জার্সির একটি আদালত মাহমুদের মুক্তি নির্দেশ দেয়। বন্দিদশায় মাহমুদ তার প্রথম সন্তানের জন্ম মিস করেন। তিনি বলেন, “আমি আমার সন্তানের জন্ম দেখতে পারিনি। এটা কোনো অর্থ দিয়েই ফিরে পাওয়া যাবে না।”

মাহমুদ খালিল তার মামলার ক্ষতিপূরণ অর্থ ব্যবহার করতে চান ভবিষ্যতের প্যালেস্টাইনপন্থী কর্মীদের সুরক্ষায় এবং আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে। পাশাপাশি তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনা এবং নির্বাসন নীতিমালার সংস্কার দাবি করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে প্যালেস্টাইনের সমর্থনে কথা বলায় এভাবে একজন স্থায়ী বাসিন্দাকে হয়রানি ও বন্দি করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে।

মুমু ২

×