ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

প্রবাসীদের জন্য বড় দুঃসংবাদ দিল যুক্তরাষ্ট্র!

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ১৪ জুন ২০২৫

প্রবাসীদের জন্য বড় দুঃসংবাদ দিল যুক্তরাষ্ট্র!

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ অনুমতিতে অবস্থানরত শত-সহস্র অভিবাসীকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের মধ্যে যারা আগে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন, তাদের ই-মেইলের মাধ্যমে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ পাঠানো হবে।

এই চার দেশের নাগরিকদের মানবিক বিবেচনায় সাময়িক বসবাসের অনুমতি দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই কর্মসূচির আওতায় অন্তত ৫ লাখ ৩১ হাজার ৬৭০ জনকে দুই বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে ডিএইচএস। এর ফলে অবৈধ সীমান্ত অতিক্রমের হার ৯৮ শতাংশ কমে যায় বলেও দাবি করা হয়।

তবে নতুন এ নির্দেশে ঠিক কতজন প্রবাসী সরাসরি প্রভাবিত হবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ, অনেকেই ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভিসা বা অন্যান্য স্থায়ী অনুমতির আওতায় চলে এসেছেন।

বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছিল, প্রত্যেক আবেদনকারীকে একজন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক পৃষ্ঠপোষক (sponsor) দিতে হয়েছে এবং তাদেরকে যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছিল। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এই কর্মসূচিকে “বিপর্যয়কর” বলে অভিহিত করেছে।

ডিএইচএস-এর মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন বলেন, “বাইডেন যুগের এই কর্মসূচি মিথ্যা দাবি, অপরাধ ও মার্কিন কর্মজীবীদের জন্য হুমকির দরজা খুলে দিয়েছিল।”

উল্লেখ্য, মানবিক কারণে চালু হওয়া এই "হিউম্যানিটারিয়ান প্যারোল" কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল শীতল যুদ্ধকালীন সময়ে। বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে এই কর্মসূচি সম্প্রসারণ করেন চার দেশের সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে।

তবে ক্ষমতায় এসেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এই কর্মসূচি বাতিল করেন। চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট সেই আদেশ বহাল রাখে, যদিও এখনো নিম্ন আদালতগুলোতে এ বিষয়ে আইনি লড়াই চলছে।

এদিকে, যেসব অভিবাসীদের বৈধ থাকার অনুমতি নেই এবং তারা স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন, তাদের জন্য ট্রাভেল সহায়তা এবং ১ হাজার ডলারের "প্রস্থান বোনাস" দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ডিএইচএস।

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও চরমে। গত নির্বাচনের সময় ট্রাম্প ও তার মিত্ররা ওহাইওর স্প্রিংফিল্ড শহরের মতো স্থানে হাইতিয়ান অভিবাসীদের উপস্থিতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। এমনকি হাইতিয়ানরা ‘পোষা প্রাণী খায়’ বলে বিভ্রান্তিকর এবং প্রমাণহীন মন্তব্যও করা হয়। যদিও এর কোনও সত্যতা মেলেনি। ট্রাম্পের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এসব বক্তব্যকে "গল্প তৈরি করে বাস্তবতা তুলে ধরার কৌশল" হিসেবে ব্যাখ্যা করেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বিপুল সংখ্যক অভিবাসীর জীবন ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল। এর আইনি ও মানবিক দিক নিয়ে এখনই বিতর্ক শুরু হয়েছে।

ফারুক

×