
ছবিঃ সংগৃহীত
সন্দেহ আর সংকটের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে ইসরাইল। গাজা উপত্যকার ধ্বংসস্তূপের ভেতর যখন শিশুর কান্না মিলিয়ে যাচ্ছে বোমার শব্দে, ঠিক তখনই পশ্চিমা বিশ্ব একে একে সরিয়ে নিচ্ছে তাদের ছায়া।
এই প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের হুশিয়ারির মুখোমুখি হয়েছে দখলদার ইসরাইল। আর সেই বার্তা এসেছে অন্য কেউ নয়—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিনিধিরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন: “যদি গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আর পাশে থাকবে না।” এই বার্তার পেছনে রয়েছে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা—মার্কিন সেনা অ্যাডান আলেকজান্ডারকে হঠাৎ করেই মুক্তি দিয়েছে হামাস। যুক্তরাষ্ট্র ও হামাস মুখোমুখি আলোচনা করেছে, যা ইসরাইলকে না জানিয়েই হয়েছে বলে দাবি।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন রেভিড জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও চান গাজার যুদ্ধ যেন দ্রুত শেষ হয়। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে সফরে সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বলেছেন, “গাজার মানুষ অনাহারে মারা যাচ্ছে। সেখানে চলছে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।”
শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, একই হুমকি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্সও। তারা সতর্ক করেছে, ইসরাইল যদি যুদ্ধ না থামায় এবং গাজায় ত্রাণ সরবরাহে বাধা অব্যাহত রাখে, তাহলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এমনকি ইসরাইলের নির্দিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপরও অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছে এই দেশগুলো।
ব্রিটিশ সরকারের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইসরাইল বেসামরিকদের জন্য মানবিক সহায়তা দিতে অস্বীকার করছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন।”
তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই হুমকিকে উল্টো একধরনের “পুরস্কার” হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তার ভাষায়: “লন্ডন, অটোয়া ও প্যারিস ৭ অক্টোবর হামলার জন্য হামলাকারীদের পুরস্কৃত করছে। এতে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ হামলার প্রেরণা সৃষ্টি হচ্ছে।”
নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, ইসরাইল যুদ্ধ থামাবে না যতক্ষণ না “পূর্ণ বিজয়” অর্জিত হয়। গাজা থেকে সব চিম্বিদের (জিম্মি) মুক্তি ও গাজার নিরস্ত্রীকরণ—এই দুই শর্তে তিনি অনড়।
অন্যদিকে, টাইমস অব ইসরাইল দাবি করছে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে মতপার্থক্য থাকলেও তারা ইসরাইলকে একা ফেলে দেবে—এই ধারণা ভিত্তিহীন। তবে সত্যিই কি তাই? এখন প্রশ্ন হলো, এক সময়ের সবচেয়ে বড় মিত্র যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে ইসরাইলের সামনে কী ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে?
ইমরান