
ছবিঃ সংগৃহীত
আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে পাকিস্তানে হামলা চালানোর পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। জম্মু ও কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলা এবং এর সম্ভাব্য জবাব নিয়ে মঙ্গলবার দেশটির তিন বাহিনীর প্রধান—চিফ অফ ডিফেন্স অনিল চৌহান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। এ সময় তিনি এই স্বাধীনতা দেন।
সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বাইসারান নামক জনপ্রিয় পর্যটন স্থানে ভয়াবহ এক হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত এবং ১২ জনের বেশি আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা সেনা পোশাকে সজ্জিত ছিল এবং পর্যটকদের লক্ষ্য করে তারা গুলি চালায়। এ ঘটনার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কঠোর ভাষায় বলেন, এই জঘন্য ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ সাঈদ মিনহাস বলেন, “কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করা হচ্ছে।” এই হামলার সময় ভারতে সফররত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ফ্যান্স। এতে ধারণা করা হচ্ছে, ভারত এখন পুরোপুরি আমেরিকার সমর্থন পাচ্ছে, যা অতীতে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমাতে সহায়ক ছিল।
বিশ্বব্যাংকের ২০২৩ সালের তথ্য অনুসারে, ভারত ও পাকিস্তান—দুই দেশেই প্রায় ২৫ কোটি দরিদ্র মানুষ বাস করে। যুদ্ধ হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই সাধারণ জনগণই। ১৯৯৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তান প্রায় চারবার সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়েছে। তবে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, তা পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল।
পাকিস্তানি বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে ভারতে নির্বাচন পূর্ব উত্তেজনা বাড়ানো হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, “বিচার চাই, তবে শান্তির ভিত্তিতে যুদ্ধ নয়।” ভারতে মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এখন প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে কাশ্মীরের মুসলিমরা সব নিপীড়নের অন্যতম ভুক্তভোগী। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করে দেন। এর ফলে কাশ্মীরের আধা স্বায়ত্তশাসিত অবস্থান শেষ হয়ে যায় এবং অঞ্চলটি সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
এই সিদ্ধান্তের পরপরই কাশ্মীরের অনেক রাজনৈতিক নেতা, স্বাধীনতাপন্থী কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। পুরো এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়, ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেওয়া হয় এবং বহুদিন ধরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।
ইমরান