![সাইপ্রাসে পাইপ বেয়ে নামতে গিয়ে বাংলাদেশির মৃত্যু সাইপ্রাসে পাইপ বেয়ে নামতে গিয়ে বাংলাদেশির মৃত্যু](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2023May/নিহত-বাংলাদেশির-মোহাম্মদ-আনিস-2404120742.jpg)
নিহত বাংলাদেশির মোহাম্মদ আনিস
সাইপ্রাসের লিমাসলের এক বাঙালি বাসায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। তল্লাশির সময় পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে বাসায় থাকা তিন অবৈধ অভিবাসী বাংলাদেশি ৫ তলা থেকে বিল্ডিংয়ের পাইপ বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করেন। প্রথমজন সফল হলেও পরের দুইজন পাইপ থেকে ছিঁটকে নিচে পড়ে যায়। একজন সঙ্গে সঙ্গেই মারা যান, অন্যজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সাইপ্রাসের স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় এ ঘটনা ঘটে। সাইপ্রাসের জাতীয় অনলাইন পত্রিকা সাইপ্রাস মেইলের সূত্র খবরটি নিশ্চিত করেছে।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আনিস। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার বিষ্ণুরামপুর গ্রামের আবদুল আওয়াল মিয়ার ছেলে। সাইপ্রাসে তিনি একটা রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন।
সাইপ্রাস প্রবাসী হাসিবুল হাসান জানায়, ২০২২ সালে নর্থ সাইপ্রাসে আসেন আনিস, সেখানে আসার পর কোনো কাজ না থাকায় আনিস অবৈধভাবে গ্রিক সাইপ্রাসে ঢুকে পড়েন। গ্রিক সাইপ্রাস আসার পর ভালোই চলছিল। কিন্তু রিফিউজি আবেদন করার পর বারবার তা বাতিল করে দেয় সরকার, এরপর অবৈধ হয়ে যান আনিস। এর আগেও কয়েকবার পুলিশ তল্লাশিতে পড়লেও বেঁচে যায় কিন্তু এবার শেষ রক্ষা হয়নি।
দালালরা লাখ লাখ টাকা ইনকামের স্বপ্ন দেখায়। বাংলাদেশ থেকে লোক আসার পর তারা জানতে পারে বাস্তবতার সঙ্গে দালালদের কথার কোনো মিল নেই। সেখানে যাওয়ার পর বেকার জীবন পার করতে হয়। পরে তারা রিফিউজি হওয়ার আশায় অবৈধভাবে গ্রিক সাইপ্রাসে ঢুকে পড়ে। কিন্তু ২০২০ সালে করোনার পর থেকে গ্রিক সাইপ্রাস সরকার অনেক কঠোর হয়ে যায়। তারা আগে শরণার্থীদের সাইপ্রাসে থাকার সুযোগ দিলেও ২০২০ সালের পর থেকে আর কাউকে সুযোগ দিচ্ছে না।
সাইপ্রাসে দক্ষিণ এশিয়া থেকে আগত যত শরণার্থী আছেন কারও ফাইলই আর গ্রহণ করছে না সরকার। নর্থ সাইপ্রাস থেকে আসা সবাই অবৈধভাবেই বসবাস করছে গ্রিক সাইপ্রাসে। এরইমধ্যে ৫০০ এর ওপর বাংলাদেশি অবৈধ শরণার্থীকে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে সাইপ্রাস সরকার।
সাইপ্রাসে বাংলাদেশি দূতাবাস না থাকায় কোনো বাংলাদেশি মারা গেলে তার লাশ দেশে পাঠাতেও অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়। সাইপ্রাসে থাকা বাংলাদেশিরা সাহায্য-সহযোগিতা করে দেশে লাশ পাঠানোর ব্যবস্থা করলেও অনেক সময় আর্থিক সংকটের কারণে তা সম্ভব হয় না।
সাইপ্রাস থেকে একটা মরদেহ দেশে পাঠাতে যে পরিমাণ অর্থ লাগে তা জোগাড় করতে অনেক সময় লেগে যায়। মৃত ব্যক্তির পরিবার থেকে টাকা দিতে না পারলে মরদেহ দেশে পাঠানো অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।
এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সাইপ্রাসে থাকা বাংলাদেশিরা লেবাননে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে সরাসরি হস্তক্ষেপ চান। যেন দূতাবাস থেকে সরকারি খরচে মরদেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
শহিদ