
.
শীতলযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়ার আয়োজন করতে যাচ্ছে পশ্চিমা বিশ্বের সামরিক জোট ন্যাটো। জোটের সামরিক কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল রব বাওয়ার শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই মহড়ায় আনুমানিক ৪০ হাজার সৈণ্য অংশগ্রহণ করবে। অ্যাডমিরাল বাওয়ার জানিয়েছেন, সম্মিলিত এই মহড়ার নামকরণ করা হয়েছে ‘স্টেডফাস্ট ডিফেন্ডার’ বা ‘অবিচল রক্ষক’ হিসেবে। জার্মানি, পোল্যান্ড ও বাল্টিক সাগর তীরবর্তী দেশ এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ার ভূখন্ডে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেছেন, বর্তমান ও ভবিষ্যতের বিভিন্ন হুমকি মোকাবিলায় এই জোটকে আরও অনেক কাজ করতে হবে।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে বলেছিল, ‘অবিচল রক্ষক’ মহড়ায় বিভিন্ন দেশের ৫০টির বেশি যুদ্ধজাহাজ, ৫০০ থেকে ৭০০ যুদ্ধবিমান অংশগ্রহণ করতে পারে। আনুষ্ঠানিকভাবে মহড়ার তারিখ নির্ধারিত না হলেও আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হতে পারে। এদিকে ন্যাটোপ্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ সতর্ক করেছেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো দ্রুত সমাপ্তি হবে না। রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিয়েভের অব্যাহত পাল্টা আক্রমণের মধ্যে রবিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। জার্মানির ফাঙ্কে মিডিয় গ্রুপের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘বেশিরভাগ যুদ্ধ প্রথম শুরু হওয়ার সময় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সময় ধরে চলে। ‘সুতরাং আমাদের অবশ্যই ইউক্রেনে দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। সংঘাত শুরু হয় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন মস্কো তার বাহিনী ইউক্রেনে পাঠায়, এতে কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইউরোপে যুদ্ধ ফিরে আসে।
কিয়েভ জুনে তার পাল্টা আক্রমণ শুরু করে, দক্ষিণ এবং পূর্বে রাশিয়ান অবস্থানের বিরুদ্ধে পিছিয়ে যায়, কিন্তু এতে সীমিত সফলতা লাভ করেছে। স্টলটেনবার্গ বলেন, আমরা সবাই দ্রুত শান্তি কামনা করছি। ‘তবে একই সময়ে আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, যদি ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং ইউক্রেনীয়রা যুদ্ধ বন্ধ করে দেয়, তাহলে তাদের দেশ আর থাকবে না। যদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এবং রাশিয়া তাদের যুদ্ধ বন্ধ করে, তাহলে আমরা শান্তি ফিরে পাব।’ ন্যাটোজোটে যোগদানে ইউক্রেনের উচ্চাকাক্সক্ষা সম্পর্কে স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, ইউক্রেন শেষ পর্যন্ত ন্যাটোতে থাকবে।’ তিনি বলেন, জুলাইয়ে জোটের শীর্ষ সম্মেলনে কিয়েভ ‘ন্যাটোর কাছাকাছি চলে গেছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘যখন এই যুদ্ধ শেষ হবে, তখন আমাদের ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দরকার হবে। অন্যথায় ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। ভিলনিয়াসে জুলাইয়ের শীর্ষ সম্মেলনে, ন্যাটো নেতারা সম্মত হন যে, কিছু শর্ত পূরণ হলে ইউক্রেন জোটে যোগ দিতে পারে এবং মার্কিন ও জার্মান কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, এর মধ্যে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন রক্ষার জন্য কিয়েভের সংস্কার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।