
ছবি: সংগৃহীত
নিরস্ত্র গাজাবাসীর ওপর ভয়াবহ পন্থায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। কখনো ত্রাণ দেওয়ার সময় গুলি ছুড়ে মারছে, আবার কখনো বিমান হামলায় প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে নিরপরাধ মানুষদের।
এবার এমন এক হত্যার কৌশল প্রকাশ্যে এসেছে, যা পূর্বের সব ভয়াবহতাকে ছাপিয়ে গেছে।
আলজাজিরার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল পেরেক ভর্তি ড্রোন মিসাইল ব্যবহার করছে। এই মিসাইলগুলো বিস্ফোরিত হলে উচ্চ গতিতে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে পেরেক ও ধাতব টুকরো, যা মানুষের শরীরে মারাত্মক অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ঘটায়।
এই ড্রোন হামলাগুলো সাধারণত বাজার, পানি সরবরাহ লাইন কিংবা জনবহুল এলাকাকে লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে— যেখানে সাধারণ মানুষ ভিড় করে।
গাজার হাসপাতালগুলোর অবস্থা এখন চরম দুর্দশাগ্রস্ত। একের পর এক হামলায় আহতের সংখ্যা এত বেড়ে গেছে যে ডাক্তারদের বেছে নিতে হচ্ছে কাকে আগে চিকিৎসা দেওয়া হবে।
চিকিৎসা সামগ্রীর ঘাটতির কারণে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন। ডায়ালাইসিস, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের চিকিৎসা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ নেই হাসপাতালগুলোতে। ফলে চিকিৎসা যন্ত্রপাতি চালানো কঠিন হয়ে গেছে। বহু রোগী দূরদূরান্ত থেকে কষ্ট করে এসেও পাচ্ছেন না চিকিৎসা।
ইসরায়েলের নতুন করে চালানো এক হামলায় অন্তত ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। এই হামলা চালানো হয় গাজার শহর ও আল-মাওয়াসি নামের আশ্রয়কেন্দ্রে।
উল্লেখ্য, আল-মাওয়াসিকে ইসরায়েল আগে নিরাপদ এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল, কিন্তু সেখানকার তাবুতে থাকা মানুষদের ওপরই চালানো হয় এই হামলা। নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচজন শিশু রয়েছে। তাবুগুলোতে আগুন ধরে যায়, ভস্মীভূত হয়ে যায় অনেকের শেষ আশ্রয়টুকুও।
এছাড়া, ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা সাতজন মানুষও নিহত হয়েছেন এই হামলায়।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও এই যুদ্ধ নিয়ে জনমত বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক জরিপে দেখা যায়, ৪৪ শতাংশ ইসরায়েলি মনে করেন, এই যুদ্ধের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।
সম্প্রতি গাজার একমাত্র ক্যাথলিক গির্জায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় তিনজন নিহত হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।
এর জবাবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী জানান, এটি ভুলবশত ঘটেছে এবং তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
শেখ ফরিদ