
ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি এবং ইসরাইলের নারকীয়তা ও সামরিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিভিন্ন দিক থেকে ইসরাইলকে কোণঠাসা করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে ইয়েমেনের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি। গাজায় ফিলিস্তিনিদের সহায়তার লক্ষ্যে বারবার তারা বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি সীমান্ত খুলে দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে হুথি নেতা সৈয়দ আব্দুল মালিক আল হুথি বলেন, "সীমান্ত খুলে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রার করিডর দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আমরা আবারও আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে করে গাজায় ফিলিস্তিনিদের সাহায্যে সরাসরি অংশ নিতে পারে ইয়েমেন।"
তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৬৭৯টি অভিযান পরিচালনা করেছে হুথি বাহিনী, এবং ভবিষ্যতে আরও সুদৃঢ় ও টার্গেটেড হামলার পরিকল্পনা রয়েছে। তার ভাষায়, “ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর তৎপরতায় ইসরাইলের নৌবন্দরগুলো ক্রমেই অচল হয়ে পড়ছে, দেশটির সবচেয়ে বড় বিমানবন্দরের কার্যক্রমও স্থবির হয়ে গেছে।”
ইসরাইলকে চাপে রাখতে হুথির এই অভিযানে কোনো বিরতি আসবে না বলেও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন আব্দুল মালিক আল হুথি।
দেশজুড়ে নতুন করে জমায়েতের ডাক
এদিকে শুক্রবার ফের দেশজুড়ে প্রতিবাদ ও সংহতির জমায়েতের আহ্বান জানিয়েছে হুথি গোষ্ঠী। তারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে এবং ইসরাইল ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রকাশে দেশবাসীর অংশগ্রহণ কামনা করেছে।
হোদেইদাহ বন্দরে ইসরাইলের বিমান হামলা
গত সোমবার দ্বিতীয়বারের মতো ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত হোদেইদাহ বন্দরে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ইয়েমেনের পরিণতি হবে ইরানের মতোই।”
এর জবাবে হুথি সশস্ত্র বিদ্রোহীরা তাৎক্ষণিকভাবে ড্রোন হামলা চালায় ইসরাইলের অভ্যন্তরে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) দাবি করে, এই হামলা তারা প্রতিহত করেছে।
তবে পরবর্তীতে হুথির প্রধান টার্গেট — বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। হুথি সূত্র দাবি করে, এতে ব্যবহার করা হয় "ফিলিস্তিন টু" শ্রেণির হাইপারসোনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল। এই হামলার ফলে মধ্য ইসরাইল জুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয় এবং লাখ লাখ ইসরাইলি বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যান।
হামলার পেছনে বন্দর পুনর্গঠন
সোমবারের ইসরাইলি হামলায় হোদেইদাহ বন্দরের একটি ডক পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয় বলে জানান হুথি নিয়ন্ত্রিত সরকারের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “আগের কয়েক দফা ইসরাইলি হামলায় যে ডকটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সেটি নতুন করে পুনর্গঠন করা হয়েছিল। এবার সেটাই আবার ধ্বংস করা হয়েছে।”
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই হামলায় ধ্বংস করা হয়েছে প্রকৌশল বাহন, জ্বালানির কন্টেইনার, সামরিক অভিযানে ব্যবহৃত নৌযান ও সন্ত্রাসী অবকাঠামো। হোদেইদাহ বন্দরকে ইরান থেকে অস্ত্র পরিবহনের রুট হিসেবে ব্যবহার করছিল হুথিরা।”
ইসরাইলের দাবি, এইসব অস্ত্রই তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।
শেখ ফরিদ