
ছবি: সংগৃহীত
ইরানের কাছে রয়েছে বেশ কয়েকটি ভূগর্ভস্থ মিসাইল সিটি। ইরানের সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে অন্তত চারটি মিসাইল সিটির অস্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এসব ভূগর্ভস্থ মিসাইল সিটি ইরানের অন্যতম সামরিক শক্তির উৎস। সেখানে কয়েক হাজার মিসাইল মজুদ রাখা হয়েছে।
এই মিসাইল সিটিগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো— এসব ঘাঁটির অবস্থান এখনো পর্যন্ত বহিরাগত কোনো শত্রু দেশের কাছে অজানা। কোথায় এই সিটিগুলো অবস্থিত, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এসব ঘাঁটি নিয়ে উদ্বিগ্ন, বিশেষ করে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির পর থেকে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান এই ভূগর্ভস্থ মিসাইল ঘাঁটিগুলো তৈরি করেছে যেন ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সম্ভাব্য বিমান বা রকেট হামলা থেকে রক্ষা পায়। যেমনটা দেখা গিয়েছিল গত ১৩ জুন, যখন ইসরাইল ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়।
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক “ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্র্যাসিস”-এর ইরান বিভাগের পরিচালক বেহনাম বিন তেললেবু সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান— উপগ্রহের নজর এড়িয়ে যাতে ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ ও নিক্ষেপ করা যায়, সেজন্যই ইরান এই ভূগর্ভস্থ ঘাঁটিগুলো নির্মাণ করেছে।
একটি মিসাইল ঘাঁটির কাঠামো সম্পর্কে ইঙ্গিতও মিলেছে। কিছুদিন আগে ইরানের এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জানান, মাটির ৫০০ মিটার গভীরে তৈরি করা হয়েছে এক মিসাইল সিটি, যার উপরে রয়েছে বহু স্তরের কংক্রিটের ঢালাই করা সুরক্ষা ছাদ।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের এই দাবি সত্য হলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা দিয়েও এমন একটি ঘাঁটি ধ্বংস করা কঠিন হতে পারে। তবে কেউ কেউ বলছেন, ইরান যেভাবে পাহাড় কেটে রকেট উৎক্ষেপণের জন্য লঞ্চিং বে বানিয়েছে, যদি সেখানে সুনির্দিষ্টভাবে হামলা চালানো যায়, তাহলে ঘাঁটিগুলো অকেজো করে দেওয়া সম্ভব হতে পারে।
তবে বেহনাম বিন তেললেবু মনে করেন, এই ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করার মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, সেগুলোর অবস্থান খুঁজে বের করা। এখনো পর্যন্ত এই ঘাঁটিগুলোর সুনির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের কাছে কোনো নিশ্চিত তথ্য নেই।
শেখ ফরিদ