ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

থাইল্যান্ড কম্বোডিয়া সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত ১৬, ঘরছাড়া ১ লক্ষাধিক

প্রকাশিত: ২১:১৮, ২৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২১:১৯, ২৫ জুলাই ২০২৫

থাইল্যান্ড কম্বোডিয়া সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত ১৬, ঘরছাড়া ১ লক্ষাধিক

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে চলছে ব্যাপক লড়াই। এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছে এবং প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকে থাই সেনারা কামান দিয়ে কম্বোডিয়ান বাহিনীর অবস্থানে গোলাবর্ষণ শুরু করে। এর পাল্টা জবাবে কম্বোডিয়ান সেনারাও রকেট ও স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। থাই বাহিনীর দাবি, কম্বোডিয়ান বাহিনী ‘নোম্যানসল্যান্ডে’ মাইন ব্যবহার করছে, অন্যদিকে নমপেন বলছে থাই সেনারা ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করছে।

সূত্র জানায়, থাই সেনারা সীমান্তের ওপার লক্ষ্য করে একটানা কামান থেকে গোলাবর্ষণ চালাচ্ছে, পাশাপাশি ড্রোন হামলার মাধ্যমে কম্বোডিয়ান ঘাঁটিগুলোতে আঘাত হানছে। কম্বোডিয়ান সেনারাও থাই বাহিনীর অবস্থানে বিএম-২১ রকেট ছুঁড়ে পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে।

সংঘাত শুরু হয়েছে ১৬ জুলাই, যখন সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন থাই সেনা আহত হন। ব্যাংককের অভিযোগ অনুযায়ী, কম্বোডিয়ান সেনারা পূর্বেই সীমান্ত এলাকায় মাইন পুঁতে রেখেছিল। এর পরপরই থাই বাহিনী কম্বোডিয়ান ভূখণ্ডে হামলা চালালে সংঘর্ষে রূপ নেয় পরিস্থিতি।

২৪ জুলাই রাত থেকে কম্বোডিয়ান বাহিনী কামানের গোলা নিক্ষেপ শুরু করে, যা ভোর পর্যন্ত চলে। এসব হামলায় বেসামরিক বসতবাড়ি ও মিলিটারি ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু ছিল। কম্বোডিয়ান বাহিনীর হামলায় অন্তত আটটি সামরিক স্থাপনা ও একাধিক ধর্মীয় উপাসনালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি F-6 যুদ্ধবিমান থেকেও বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এই পরিস্থিতিতে থাইল্যান্ডের চারটি প্রদেশ থেকে অন্তত এক লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে, কম্বোডিয়ান সীমান্তবর্তী এলাকা থেকেও ২০ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে দ্রুত সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, আসিয়ান এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনঘনিষ্ঠ এই দুই দেশ আসিয়ানের সদস্য হওয়ায় তারা আশা করছে, খুব শিগগিরই উভয় দেশ আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমিত করবে।

বর্তমান পরিস্থিতি এশিয়া অঞ্চলে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তের দিকে।

Jahan

×