ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৬ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২

কিশোর-কিশোরীদের হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ: যা জানা জরুরি অভিভাবক ও তরুণদের

প্রকাশিত: ১৪:১০, ৬ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ১৪:১০, ৬ আগস্ট ২০২৫

কিশোর-কিশোরীদের হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ: যা জানা জরুরি অভিভাবক ও তরুণদের

ছবি: সংগৃহীত।

সাধারণত হার্ট অ্যাটাককে প্রাপ্তবয়স্কদের রোগ হিসেবে মনে করা হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেও এই ঝুঁকি বাড়ছে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, যেমন-অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ব্যায়ামের অভাব, ধূমপান, মাদক গ্রহণ এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ-এই বয়সেই হৃদরোগের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।

এসব কারণ দীর্ঘ সময় ধরে হৃদযন্ত্র ও রক্তনালির ক্ষতি করে, যার ফলে হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ ধরা পড়তে দেরি হয়। অনেক সময় অভিভাবক ও কিশোর-কিশোরীরা এ ধরনের লক্ষণকে গুরুত্ব না দিয়ে উপেক্ষা করেন, যার ফলে ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং চিকিৎসা পেতে দেরি হয়।

কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ উপসর্গ
১. বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি:
এই উপসর্গটি সবচেয়ে সাধারণ। বুকে চাপ, টান, জ্বালা বা ভারী লাগার অনুভূতি হতে পারে। ব্যথা কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে বা আসা-যাওয়া করতে পারে। অনেকেই একে হালকা সমস্যা মনে করে এড়িয়ে যান, যা বিপজ্জনক হতে পারে।

২. শ্বাসকষ্ট:
হঠাৎ শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া বা বিশ্রামে থেকেও পর্যাপ্ত বাতাস পাচ্ছেন না মনে হওয়া হৃদযন্ত্রের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

৩. শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথা:
বুকের ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে বাহুতে (বিশেষত বাম বাহু), পিঠে, ঘাড়ে, চোয়ালে বা পেটেও। এসব ব্যথা অনেক সময় পেশির টান বা হজমের সমস্যা বলে ভুল ধরা হয়।

৪. অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা:
কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বল লাগা, যা দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটায়-এটিও হৃদরোগের সতর্ক সংকেত হতে পারে।

৫. মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হওয়ার অনুভব:
হঠাৎ মাথা ঘোরা, হালকা লাগা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অনুভব-এসব হৃদযন্ত্র থেকে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়ার ইঙ্গিত হতে পারে। এতে অনেক সময় হৃদস্পন্দন দ্রুত বা অনিয়মিত হয়ে পড়ে।

৬. বমি বমি ভাব বা ঘাম:
কিছু কিশোর হৃদরোগের সময় হঠাৎ বমি, বমি বমি ভাব বা ঠান্ডা ঘামে ভিজে যেতে পারে। অনেক সময় এগুলো সাধারণ জ্বর বা ফ্লু ভেবে অবহেলা করা হয়।

কেন এই উপসর্গগুলো চিনে রাখা জরুরি?
অভিভাবক ও কিশোর-কিশোরীরা প্রায়ই এসব উপসর্গকে উদ্বেগ, হজমের সমস্যা বা পেশির ব্যথা হিসেবে ভুল ব্যাখ্যা করেন। ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেতে দেরি হয়, যা হৃদযন্ত্রে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি বা হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

কখন দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত?
যদি উপরোক্ত যেকোনো উপসর্গ দেখা যায়-বিশেষ করে বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে-তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। দ্রুত চিকিৎসা নিলে বড় ধরনের জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

তরুণদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অস্বীকার করা উচিত নয়। সচেতনতা, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং উপসর্গের প্রতি সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে পারলেই হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। অভিভাবক ও কিশোরদের উচিত, এসব লক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া।

সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।

মিরাজ খান

আরো পড়ুন  

×