
ছবি: সংগৃহীত
ফ্যাটি লিভার—এক সময় যা মূলত মদ্যপানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রোগ হিসেবে বিবেচিত হতো—এখন তা দ্রুত বাড়ছে কর্মজীবী মানুষের মধ্যে, বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মরতদের মধ্যে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডার সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, ভারতের প্রায় ৮০ শতাংশ আইটি কর্মী হয়তো মেটাবলিক ডিসফাংশন-অ্যাসোসিয়েটেড ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (MAFLD)-এ আক্রান্ত, যার বেশিরভাগই নিজের অজান্তেই এই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
দীর্ঘ সময় ডেস্কে বসে কাজ, সময়মতো না খাওয়া, এবং দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ—সব মিলিয়ে লিভার সমস্যার জমে ওঠা যেন অবধারিত।
তবে আশার কথা হলো—এই রোগ পাল্টানো যায়, মাত্র তিন মাসের অভ্যাসগত পরিবর্তনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিনের সকাল শুরু করুন এই ৬টি সহজ কিন্তু কার্যকর অভ্যাস দিয়ে—লিভার আবার হয়ে উঠবে সুস্থ, কর্মক্ষম।
১. দিন শুরু করুন হালকা গরম লেবুপানি ও এক চিমটি দারুচিনি দিয়ে
শুধু লেবুপানি নয়, তার সঙ্গে সিলন দারুচিনি মিশিয়ে খেলে শরীরে বিলির নিঃসরণ বাড়ে ও রক্তে ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ইনসুলিন লেভেল বেড়ে যাওয়াই অনেক সময় ফ্যাটি লিভারের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সকাল বেলা খালি পেটে হালকা গরম পানি, তাজা লেবুর রস ও সামান্য দারচিনি শরীরকে ধীরে ধীরে জাগিয়ে তোলে এবং চর্বি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
২. ১২ মিনিট ‘লিভার ফোকাসড’ যোগব্যায়াম করুন
সব ধরনের ব্যায়ামই উপকারী হলেও লিভার-ভিত্তিক যোগাসন যেমন– ভুজঙ্গাসন, অর্ধ মাতস্যেন্দ্রাসন এবং কপালভাতি বিশেষভাবে কার্যকর। এই যোগাভ্যাসগুলো পেটের চর্বি হ্রাস ও লিভারে রক্তপ্রবাহ বাড়াতে সহায়তা করে।
প্রতিদিন মাত্র ১২ মিনিট এই যোগব্যায়াম করলে হজম শক্তি বাড়ে এবং লিভারকে সক্রিয় রাখে।
৩. নাশতার আগে ১০০ মি.লি. কাঁচা বিট ও গাজরের রস খান
বিট ও গাজরে থাকা বিটেইন, বিটালাইনস ও ক্যারোটিনয়েডস লিভার কোষের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়।
খাবারের আগে ১০০ মি.লি. তাজা বিট-গাজরের রস হজমে সহায়ক এনজাইম সক্রিয় করে এবং লিভার পরিষ্কারে সাহায্য করে।
৪. প্রাতরাশে ভাজাভুজি নয়, নিন মিলেট ও বাদাম
সুস্থ লিভারের জন্য হালকা, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং ফাইবারসমৃদ্ধ প্রাতরাশ জরুরি।
ফক্সটেল বা কোদো মিলেটের ভাত, সঙ্গে ভেজানো আখরোট, ফ্ল্যাক্সসিড ও আমলকি চাটনি দিয়ে দিন শুরু করলে চর্বি কমে এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫. সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে প্রকৃতির আলোয় ৭ মিনিট থাকুন
সকালবেলা কিছুক্ষণ প্রকৃত আলোতে থাকলে কর্টিসল হরমোন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সারাদিন ঘুম-জাগরণ চক্র ঠিক থাকে।
এটি লিভারের এনজাইম কার্যক্রম এবং হরমোন ব্যালান্সে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে।
উইন্ডোর পাশে নয়, সরাসরি বাইরের আলোয় থাকতে হবে এই সুবিধা পেতে।
৬. ক্যাফেইনের বদলে পান করুন ড্যান্ডেলিয়ন বা মৌরি চা
ক্যাফেইন লিভারের জন্য খারাপ না হলেও, যদি ডিহাইড্রেশন, পেটের গ্যাস বা মানসিক চাপ থাকে—তবে তা ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
সেক্ষেত্রে সকালে ড্যান্ডেলিয়ন রুট টি বা মৌরি চা খেলে হজম ভালো হয়, ফোলাভাব কমে এবং হালকা টক্সিন বেরিয়ে যায়।
আবির