
টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। হ্রদের পানি ১০৮ এমএসএল-এ পৌঁছেছে, যা কাপ্তাই বাঁধের বিপদসীমার কাছাকাছি। ফলে যেকোনো সময় বাঁধের ১৬টি স্পিলওয়ে খুলে পানি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
ভারতের মিজোরাম থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির প্রভাবে বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর দাঁড়িয়েছে ১০৭.৮৪ এমএসএল। কাপ্তাই বাঁধে সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। ১০৮ এমএসএল-এ পৌঁছালেই একে বিপদসীমা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ কারণে রোববার রাতে জরুরি বৈঠকে বাঁধ কর্তৃপক্ষ সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টার সময় থেকে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি স্পিলওয়ে খুলে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পানির প্রবাহ তুলনামূলক কম থাকায় সেদিন স্পিলওয়ে খোলা হয়নি।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রতিবেদককে জানান, “আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ১৬টি স্পিলওয়ে ৬ ইঞ্চি করে খুলে পানি ছাড়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে রাতেই যদি পানির চাপ বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে যেকোনো সময় স্পিলওয়ে খুলে দেওয়া হতে পারে।”
তিনি আরও জানান, “১৬টি স্পিলওয়ে দিয়ে ৬ ইঞ্চি করে পানি ছাড়লে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৯ হাজার কিউসেক পানি ছাড় হবে। পাশাপাশি বর্তমানে ৫টি বিদ্যুৎ ইউনিটের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে পাঠানো হচ্ছে। এতে ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে, যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড।”
তিনি বলেন, “পানি ছাড়ার আগেই নিচু এলাকার জনগণকে সতর্ক করতে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। পানির স্তর বিবেচনা করেই ঠিক করা হবে কত ইঞ্চি করে স্পিলওয়ে খোলা হবে।”
তবে বাঁধ থেকে পানি ছাড়লেও কর্ণফুলী নদীর আশপাশে বন্যার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।
এদিকে হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় রাঙামাটি শহরের লেকপাড় ও তীরবর্তী অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বহু ঘরবাড়ি হ্রদের পানিতে ডুবে গেছে। বিশেষ করে লংগদু, বরকল, নানিয়ারচর, জুরাছড়ি ও বাঘাইছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার জানান, “আমাদের এলাকায় প্রচুর উজানের পানি ঢুকে পড়েছে। এতে অনেক ঘরবাড়ি ডুবে গেছে এবং মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে।”
মিমিয়া