
একসময় ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করতেন একে-অপরকে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই উষ্ণ সম্পর্ক রূপ নিয়েছে ঠাণ্ডা সংঘাতে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বন্ধুত্ব এখন অতীত। বুধবার ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫% পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে দিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের নতুন অবস্থান ও মন্তব্যে স্পষ্ট তার পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতা এবং ভারতের প্রতি বিরূপ মনোভাব। তিনি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ্যেই মোদি সরকারকে কটাক্ষ করেন এবং ভারতের উচ্চ শুল্ক নীতির সমালোচনা করেন। একইসাথে, রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার বিষয়েও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
ভারতের পাল্টা প্রতিক্রিয়া: এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান নিয়ে অনাগ্রহ
এর জবাবে ভারতও দ্রুত কূটনৈতিক সুরে পাল্টা বার্তা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মোদি সরকার মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যৌথভাবে বিমান তৈরির পরিকল্পনাও আপাতত বন্ধ হয়ে গেছে।
এর পাশাপাশি, ৩১ জুলাই ক্যালিফোর্নিয়ায় মার্কিন এফ-৩৫ বিমানের দুর্ঘটনাও ভারতের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাফাল বিতর্ক এবং পশ্চিমা প্রযুক্তির উপর অনাস্থা
এদিকে, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে রাফাল যুদ্ধবিমানের ব্যর্থতা ঘিরেও মোদি সরকারকে ঘরে-বাইরে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। সেই কারণেই ভারত হয়তো পশ্চিমা যুদ্ধবিমান নির্ভরতা কমিয়ে আত্মনির্ভরশীলতা এবং বিকল্প উৎসের দিকে ঝুঁকছে।
রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক অটুট
ট্রাম্প প্রশাসনের হুমকি সত্ত্বেও, মোদি সরকার স্পষ্ট করেছে যে রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার সিদ্ধান্তে অটল থাকবে। ফলে ট্রাম্পের কড়া অবস্থানের পর দুই দেশের সম্পর্কে আবারও তৈরি হয়েছে কূটনৈতিক টানাপোড়েন ও অনিশ্চয়তা।
বন্ধুত্ব থেকে দূরত্বে
২০২০ সালে ভারতের সফরে এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমরা একে অন্যের বন্ধু” কিন্তু পাঁচ বছর পর সেই ‘বন্ধুত্ব’ এখন শুল্ক, হুমকি ও অনাস্থার রূপ নিয়েছে। ট্রাম্প-মোদি সমীকরণ এখন নতুন করে হিসাব কষছে বৈশ্বিক কূটনীতি ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক।
Jahan