ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৫ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

বাংলাকে বাংলাদেশের ভাষা আখ্যা দেয়ায় চটলেন মমতা ব্যানার্জী

প্রকাশিত: ২১:১৭, ৪ আগস্ট ২০২৫

বাংলাকে বাংলাদেশের ভাষা আখ্যা দেয়ায় চটলেন মমতা ব্যানার্জী

বাংলাকে বাংলাদেশের ভাষা হিসেবে উল্লেখ করায় দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এই ঘটনাকে তিনি "অসাংবিধানিক ও দেশবিরোধী" বলে উল্লেখ করে কড়া প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন।

বিতর্কের সূত্রপাত ২৯ জুলাই দিল্লি পুলিশের পাঠানো একটি চিঠি ঘিরে। সেখানে বাংলায় লেখা কিছু নথির অনুবাদের অনুরোধ জানানো হয়, তবে ভাষাটিকে 'বাংলাদেশি ভাষা' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে সৃষ্টি হয় তীব্র বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের বাঙালি-বিরোধী মনোভাবের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বাংলা ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবহৃত ভাষা। তাকে বাংলাদেশি ভাষা বলা শুধু অপমান নয়, এটি দেশের সংবিধান ও বহুত্ববাদী চরিত্রের ওপর সরাসরি আঘাত।”

সম্প্রতি বিজেপি নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগও বারবার উঠে এসেছে। ‘অবৈধ বসবাসকারী’ অভিযানের নামে পশ্চিমবঙ্গের বহু বাঙালিকে হয়রানির ঘটনা সামনে এসেছে। এমনকি শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার কারণেই অনেককে আটক ও বাংলাদেশে পুশইনের ঘটনাও গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। বিভিন্ন জায়গায় বাঙালি বসতিতে বিদ্যুৎ ও পানির মতো জরুরি সেবা বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগও রয়েছে।

এছাড়া আসামের মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কেউ যদি বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে উল্লেখ করে, তাহলে তাকে 'বিদেশি' হিসেবে চিহ্নিত করা হতে পারে।

ভারতে আনুমানিক ১০ কোটিরও বেশি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন। এদের বেশিরভাগের বসবাস পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ওড়িশা, ত্রিপুরা ও ঝাড়খণ্ডে। পাশাপাশি দিল্লি, গুজরাট, রাজস্থানসহ অন্যান্য রাজ্যেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাভাষী নাগরিক রয়েছেন।

বাংলাকে বাংলাদেশি ভাষা বলায় এই বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি কেবল ভাষার অবমাননা নয়, বরং ভারতীয় জাতিসত্তার ভেতর বিভাজনের ইন্ধন যোগানোর মতো একটি বিপজ্জনক প্রবণতা।

Jahan

×