ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

পিঠে ব্যথা, নাকি কিডনিতে পাথর? সতর্ক হোন এই লক্ষণগুলো দেখলে

প্রকাশিত: ০১:১৬, ১২ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০১:২৬, ১২ জুলাই ২০২৫

পিঠে ব্যথা, নাকি কিডনিতে পাথর? সতর্ক হোন এই লক্ষণগুলো দেখলে

ছবি: সংগৃহীত।

হঠাৎ করে কোমরের নিচের দিকে তীব্র ব্যথা অনুভব করছেন? তাহলে এটি হালকাভাবে নেওয়া ঠিক নয়—বিশেষ করে যদি ব্যথাটি ঘন ঘন হয় বা দীর্ঘদিন ধরে হয়ে থাকে। সাধারণত এমন ব্যথাকে পেশি টান বা গ্যাসের সমস্যা বলে ধরে নেওয়া হয়। তবে অনেক সময় এটি কিডনির পাথরের মতো গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে। কিন্তু কিডনির পাথরের কারণে হওয়া ব্যথা ও পিঠে বা গ্যাসের কারণে হওয়া ব্যথার মধ্যে পার্থক্য কী?

এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো এই ব্যথাগুলোর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য, যা আপনাকে ব্যথার উৎস নির্ধারণে সাহায্য করতে পারে।

ব্যথার প্রকৃতি ও তীব্রতা:
কিডনির পাথরের ব্যথা সাধারণত হঠাৎ শুরু হয়, অত্যন্ত তীব্র ও ধারালো হয়ে থাকে। যাঁরা এই ব্যথায় ভোগেন, তাঁরা এটিকে এক ধরনের ছুরিকাঘাতের মতো অনুভূতি হিসেবে বর্ণনা করেন, যেন ভিতর থেকে কেউ চেপে ধরছে বা খোঁচাচ্ছে। কখনও কখনও এই ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে বমি বমি ভাব বা বমি পর্যন্ত হতে পারে।
অন্যদিকে, সাধারণ পিঠের ব্যথা বা গ্যাসের ব্যথা তুলনামূলকভাবে মৃদু, দীর্ঘস্থায়ী এবং নিরবিচারে টান ধরা ধরনের হয়। পেশি টানজনিত ব্যথা শরীরের কোনো ভঙ্গি বা নড়াচড়ার উপর নির্ভর করে আরও বাড়তে পারে।

ব্যথার অবস্থান ও গতিবিধি:
কিডনির পাথরের ব্যথা সাধারণত পাঁজরের নিচ থেকে শুরু হয়ে নিচের পেট ও কুঁচকি পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে, কারণ পাথরটি মূত্রনালির মধ্যে দিয়ে চলতে থাকে। ফলে ব্যথাটি এক জায়গায় স্থির না থেকে নড়াচড়া করে।
অন্যদিকে, পিঠের ব্যথা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট স্থানে স্থির থাকে, যেখানে পেশি টান লেগেছে। গ্যাসের ব্যথা সাধারণত পেট বা উপরের পেটের দিকে অনুভূত হয় এবং হজমের অবস্থা বা দেহের ভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে।

ব্যথার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য উপসর্গ:
কিডনির পাথরের ব্যথার সঙ্গে প্রায়ই প্রস্রাবে রক্ত আসা, প্রস্রাব ঘোলা হওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, জ্বর বা শীত লাগার মতো উপসর্গ দেখা যায়।
এই উপসর্গগুলো সাধারণ পিঠের ব্যথা বা গ্যাসের ব্যথার সঙ্গে থাকে না।
গ্যাসের ব্যথার ক্ষেত্রে পেট ফাঁপা, ঢেকুর ওঠা বা গ্যাস বের হলে স্বস্তি পাওয়ার অনুভূতি থাকতে পারে। পিঠের ব্যথায় সাধারণত পেশির শক্ত হয়ে যাওয়া বা কোমরে অস্বস্তি অনুভূত হয়।

চলাফেরা বা ভঙ্গির প্রভাব:
পিঠের ব্যথা সাধারণত পেশি টান বা ক্লান্তির কারণে হয়, ফলে দেহের নড়াচড়া বা অবস্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে এটি বেড়েও যেতে পারে বা উপশম পেতে পারে। যেমন: বাঁকানো, বসা বা শোয়া অবস্থায় ব্যথা বাড়তে বা কমতে পারে। 

গ্যাসের ব্যথা হাঁটার পর বা বাথরুম ব্যবহার করার পর কমে যেতে পারে। কিন্তু কিডনির পাথরের ব্যথার ক্ষেত্রে এমনটা হয় না। এ ব্যথা সাধারণত দেহের নড়াচড়া বা বিশ্রামে উপশম হয় না। ভুক্তভোগীরা ক্রমাগত অবস্থান পরিবর্তন করেও আরাম পান না। এই অবিরত, তীক্ষ্ণ ও অসহনীয় ব্যথা কিডনির পাথরের একটি স্পষ্ট লক্ষণ।

মিরাজ খান

×