
ছবি: জনকণ্ঠ
সবকিছু থাকা সত্ত্বেও চালু হয়নি চুয়াডাঙ্গা ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ)। দুই বছর ধরে চালুর অপেক্ষায় আছে ইউনিটটি। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র জনবল সংকটে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জুন মাসে কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করে। সেই থেকেই ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালের ৭ম তলায় বাক্সবন্দি অবস্থায় রয়েছে যন্ত্রপাতিগুলো। এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মুমূর্ষু রোগীরা। ঝুঁকে পড়ছেন মৃত্যুর মুখে। অনেক রোগীর স্বজনরা মুমূর্ষু অবস্থায় রোগীদের রাজশাহী-খুলনা-ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসার জন্য। যার কারণে চিকিৎসা খরচ ব্যয়বহুল হচ্ছে।
এদিকে দেশে আবারও নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। আক্রান্ত হচ্ছে সব বয়সের মানুষ। চুয়াডাঙ্গায় মানুষের মাঝে করোনার উপসর্গ দেখা দিলেও কিট না থাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও করোনা পরীক্ষা না করাতে পারায় মানুষ এক অজানা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। করোনার উপসর্গ নিয়েই চলাচল করছে হাট-বাজারে।
২০২০ সালের ১৮ মার্চ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর শহরের ইতালি ফেরত এক যুবকের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এরপর জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। করোনা আক্রান্ত হয়ে এ জেলায় মারা যায় ২১০ জন। ৪৫ হাজার ১৮৭ জনের করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ হয় ৭ হাজার ৯২৪ জন। জেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষ করোনা টিকা নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, একজন কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিসের জন্য আইসিইউ প্রয়োজন। তখন রাজশাহী-খুলনা-ঢাকায় নিতে হয়। এসব রোগী বহন করতে অনেক সময় পথেই মৃত্যু ঘটে। ইউনিটটি চালু হলে আমাদের অর্থ এবং সময় দুটোই সাশ্রয় হতো। আমরা চাই ইউনিটটি চালুর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এসব যন্ত্রপাতি পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে, বাসা বাঁধছে পাখিতে, খাচ্ছে ইঁদুরে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রকিব সাদী বলেন, হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটটি চালু না হওয়ায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা মুমূর্ষু রোগীদের সেবা দিতে পারছি না। এছাড়া আমাদের দেশে ইতোমধ্যে করোনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। অক্সিজেন সরবরাহ, করোনা আইসোলেটেড ওয়ার্ড, প্রয়োজনীয় ওষুধ, চিকিৎসক ও নার্স প্রস্তুত রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস জানান, এ হাসপাতালের ১০ বেডের একটি আইসিইউ ইউনিট রয়েছে। প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় সচল করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে চালুর ব্যবস্থা হলে রোগীরা সেবা পাবেন।
মুমু ২