
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ
তিন লাখ নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঝিনাইদহব্যাপী বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে ঝিনাইদহ শহরের কুটুম কমিউনিটি সেন্টার অডিটোরিযেমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি শেখ আব্দুল হালিম খোকন। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। অনুষ্ঠানে জেলার ৬ উপজেলার কয়েক’শ নেতাকর্মী বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি যোগদান করেন।
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি কর্মসূচি এমএ মজিদের সভাপতিত্বে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল, মীর রবিউল ইসলাম লাভলু, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু সাইদ, ও তারেকুজ্জামান তারেক বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি কামাল আজাদ পান্নু, আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুর রহমান পপ্পু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, এম শাহজাহান আলী, আসিফ ইকবাল মাখন, জেলা যুবদলের সভাপতি আহসান হাবিব রনক, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম পিন্টু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রুহুল আমিন পিকুল, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম,জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি টোকন জোয়ার্দ্দার, জেলা জাসারে আহ্বায়ক এমএ কবীর, সদস্য সচিব কামরুজ্জামান লিটন, জেলা ছাত্র দলের সভাপতি সৌমেনুজ্জামান সোমেন, সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মানিক সহ জেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, কৃষক দল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথি বলেন, দেশ নায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে তৃণমুলে দল আরো শক্তিশালী হবে। নেতৃবৃন্দ নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি মধ্যে ফ্যাসিস্ট আ’লীগের নেতাকর্মীরা ঢুকে যেতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন। দীর্ঘদিন হামলা, মামলা, অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে আজকের এই অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দলের কোন নেতা-কর্মীর কারণে যাতে আমাদের সকল অর্জন নষ্ট হয়ে যায় সে ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে ৩১ দফা কর্মসুচি দিয়েছেন তার আলোকে কাজ করে যেতে হবে। এর আগে আগে দলের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি পুলিশ ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কারণে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তাদের প্রচণ্ড বাধার মুখে যারা সদস্য হয়েছিল তারাও সেটিকে এড়িয়ে চলেছে। দলের মিছিল মিটিংয়ে সবাই আসতে ভয় পেত। যাদেরকে দু:সময়ে দেখা যায়নি তারা এখন সামনের সারিতে এসে বসছেন। দলে ভীড় করছে। তারা আওয়ামী লীগ ফিরলে তারা সাথে থাকবে না। তাদের আশ্রয় -প্রশ্রয় দিবেন না। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার কারণে দালের কাছে আপনি খারাপ হয়ে যাবেন। বিশেষ করে ৫ আগষ্টের পর যারা দলে সক্রিয় তাদেরকে প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। দলের পরিক্ষীত নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, কোন চেয়ারম্যান, মেম্বর যেই হোক না কেন তাদেরকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। দলের নেতা-কর্মীদের মধ্য থেকেই চেয়ারম্যান মেম্বর বানাতে হবে।
তিনি বলেন বিএনপিকে সমালোচনা করতে হলে জেনে বুঝে করতে হবে। ধানের শীষ প্রতীক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের। এই প্রতীকের প্রতি এদেশে মানুষের ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালোবাস, আস্তা আছে। তিনি সকলকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আদেশ নির্দেশ মেনে চলার জন্য আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সদস্য ফরম পূরণের সময় আস্থা সতর্ক থাকার আস্থা জানান। কোন প্রকারেই পতিত ফ্যাসিস্ট যেন আস্থা করে না নেই। নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের ভোটের অভাব নেই। ফ্যাসিস্টদের ভোটের আশা করার দরকার নেই। নিজেরা ঐকবদ্ধ থাকলেই বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করবে ইনশাল্লাহ।
অনুষ্ঠানে সভাপতি এডভোকেট এমএ মজিদ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা কোন মানুষের সাথে কোন ধরণের খারাপ ব্যবহার করবেন না। আপনার আচরণের কারনে দল ক্ষতিগ্রস্থ হোক এমন কাজ থেকে দয়া করে বিরত থাকবেন। বড় দল হিসেবে আপনার কাছে মানুষ আসবে তাদের সাথে অবশ্যইা ভালো আচরণ করবেন। সমাজের কোন বিচার শালিসে যাওয়ার দরকার নেই। সমাজের মাতব্বররা বিচার শালিস করবেন। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির দুর্জয় ঘাঁটি। এ জেলা থেকে সবচে বেশি সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। তিনি বলেন ঝিনাইদহ জেলায় ৬টি উপজেলার ৬৭টি ইউনিয়নে ৬০৩টি ওয়ার্ড রয়েছে। এই ৬৭টি ইউনিয়নে মোট ১লাখ ২০হাজার ৬শ নতুন সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে ২০০ করে নতুন সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। ছাড়া ৬টি পৌরসভার ৫৪টি ওয়ার্ডে ৯৭ হাজার দুই’শ সদস্য সংগ্রহ করা হবে। সব মিলিয়ে জেলায় দুই লাখ ১৭ হাজার ৮০০ নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা কেন্দ্রের নির্দেশ। তিনি বলেন আমরা এর চেয়ে বেশী করে ৩লাখ সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য নবায়ন করে বিএনপির দুর্জয় ঘাঁটি হিসেবে দলকে উপহার দিতে চায়। তিনি সকলকে বিএনপির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকার আহবান জানান।
ফারুক