
ছবি: সংগৃহীত
ফ্যাটি লিভার এখন অনেকেরই সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সুখবর হলো, প্রতিদিনকার কিছু সহজলভ্য পানীয় নিয়মিত গ্রহণ করলে এই সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব। গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু প্রাকৃতিক পানীয় যেমন গ্রিন টি, বিটের রস ও ব্ল্যাক কফি লিভারে জমে থাকা চর্বি কমাতে এবং লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমনই পাঁচটি উপকারী পানীয় সম্পর্কে, যেগুলো নিয়মিত পান করলে ধাপে ধাপে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে আপনার লিভার।
গ্রিন টি
গ্রিন টিতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ক্যাটেচিন, যা লিভারের প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সহায়ক। এটি লিভারের ফ্যাট মেটাবলিজম বাড়িয়ে লিভার কোষে জমে থাকা চর্বি কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ২-৩ কাপ গ্রিন টি পান করলে লিভার এনজাইমের মাত্রা হ্রাস পায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে। তবে এটি চিনি বা দুধ ছাড়া পান করাই সবচেয়ে উপকারী।
লেবু পানি
প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে লিভার প্রাকৃতিকভাবে পরিষ্কার হয়। লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভার থেকে টক্সিন বের করে দেয় এবং গ্লুটাথায়ন নামক গুরুত্বপূর্ণ এনজাইম তৈরিতে সহায়তা করে। এটি পরিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে, পিত্ত নিঃসরণ বাড়ায় এবং দীর্ঘমেয়াদে লিভারে চর্বি জমা কমায়।
বিটের রস
বিটের রসে থাকা বিটালাইন ও বিটেইন নামক উপাদান লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এগুলো লিভার কোষের সুরক্ষা নিশ্চিত করে, টক্সিন দূর করে এবং কোষ পুনর্জন্মে সহায়তা করে। সপ্তাহে ২-৩ দিন বিটের রস পান করলে লিভার এনজাইমের মাত্রা বাড়ে ও ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়া, বিটে থাকা নাইট্রেট রক্তসঞ্চালন উন্নত করে।
ব্ল্যাক কফি
ব্ল্যাক কফি লিভার স্বাস্থ্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি গবেষণা হওয়া পানীয়। এতে থাকা ক্যাফেইন ও ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড প্রদাহ কমায় এবং লিভার কোষে চর্বি জমতে বাধা দেয়। প্রতিদিন ২-৩ কাপ চিনি ও দুধ ছাড়া ব্ল্যাক কফি পান করলে লিভার সিরোসিস ও নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস পায়।
অ্যাপল সিডার ভিনেগার (ACV)
অ্যাপল সিডার ভিনেগারে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড পরিপাক ক্রিয়া উন্নত করে, মেটাবলিজম বাড়ায় এবং লিভারে চর্বি জমা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খাবারের আগে এক গ্লাস পানিতে ১ চামচ ভিনেগার মিশিয়ে পান করলে ফ্যাট ভাঙতে সহায়তা করে ও ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে। তবে এটি অবশ্যই পরিমাণ মতো এবং পানির সঙ্গে মিশিয়ে গ্রহণ করা উচিত, না হলে পেটে জ্বালাভাব হতে পারে।
এই পাঁচটি পানীয় নিয়মিত পান করলে ধীরে ধীরে লিভার হবে আরও সুস্থ ও কার্যকর। তবে যেকোনো স্বাস্থ্য পরামর্শ গ্রহণের আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা শ্রেয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এম.কে.