
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমানে মানুষের খাদ্য তালিকায় প্রোটিন যেন হয়ে উঠেছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম। প্রতিদিনের নাশতা থেকে শুরু করে রাতের খাবার পর্যন্ত — প্রোটিন বার, স্মুদি বা ডিম খাওয়ার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। মনে হচ্ছে, সবাই যেন ভাবছে বেশি প্রোটিন খেলেই মিলবে ছিপছিপে শরীর, ছয় প্যাক পেট আর সুস্থ জীবন।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষয়টা অতটা সোজা নয়। আমাদের শরীর বেঁচে থাকার জন্য প্রোটিন অবশ্যই প্রয়োজন। প্রোটিনে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে — যেমন পেশি গঠন ও রক্ষা, হরমোন তৈরি, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো এবং চুল, ত্বক ও নখ সুস্থ রাখা। তবে শরীর নিজের কিছু অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করলেও, কিছু অবশ্যই খাদ্য থেকে পেতে হয়। এ কারণেই প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ।
তবে প্রশ্ন হলো, কতটুকু প্রোটিন খাওয়া উচিত? পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রয়োজন গড়ে তার ওজনের প্রতি কেজিতে ০.৮ গ্রাম হারে। অর্থাৎ, কারও ওজন যদি ৬৮ কেজি হয়, তাহলে তার দৈনিক প্রোটিন প্রয়োজন প্রায় ৫৪ গ্রাম। তবে এটা একেবারে ন্যূনতম চাহিদা।
আরও একদল গবেষক বলছেন, প্রোটিন যেন দৈনিক মোট ক্যালোরির ১০% থেকে ৩৫% পর্যন্ত হয় — এটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে সেটা নির্ভর করে ব্যক্তির বয়স, ওজন, লিঙ্গ ও দৈহিক পরিশ্রমের ওপর।
অথচ বাস্তবতা হলো, অনেকেই মনে করছেন যত বেশি প্রোটিন খাবেন, তত বেশি ফিট থাকবেন। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হচ্ছে যে, প্রতিদিন প্রচুর প্রোটিন না খেলে তারা সুস্থ থাকবেন না। এক গবেষক মজা করে বলেছেন, “কারও নাশতা যদি প্রোটিন বার, কাঁচা ডিম বা প্রোটিন স্মুদি না হয়, তাহলে যেন শরীর গঠনই হবে না!”
এই ‘প্রোটিনমুগ্ধতা’ কিছুটা বিপজ্জনকও হতে পারে। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনির ওপর চাপ ফেলতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে শরীরে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে।
তাই খাবারে প্রোটিন অবশ্যই দরকার, তবে তার পরিমাণ ও উৎস সঠিক হওয়া জরুরি। সবসময় মনে রাখা উচিত — স্বাস্থ্য সচেতনতা ভালো, কিন্তু অতিরিক্ত চিন্তা নয়।
সূত্র: https://edition.cnn.com/2025/04/15/health/how-to-eat-more-protein-diet-wellness
এএইচএ