
ছবিঃ সংগৃহীত
জমি সংক্রান্ত যে কোনো প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলোর একটি হলো খতিয়ান। এটি একটি সরকারি দলিল, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট একটি জমির মালিকানা, দখল, সীমানা এবং খাজনা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। যারা জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে চান কিংবা জমি নিয়ে আইনি বা পারিবারিক বিরোধ রয়েছে, তাদের জন্য খতিয়ানের তথ্য জানা অত্যন্ত জরুরি।
খুব সহজভাবে বললে, খতিয়ান হচ্ছে জমির আইনি জন্মসনদ। এতে উল্লেখ থাকে জমির প্রকৃত মালিক কে, জমির পরিমাণ কত, দখলদার কে, এবং সরকারকে কত খাজনা দেওয়া হচ্ছে ইত্যাদি।
নিচে তুলে ধরা হলো—একটি জমির খতিয়ানে সাধারণত যেসব বিষয় উল্লেখ থাকে:
📄 খতিয়ানে যেসব তথ্য থাকে
-
✅ দাগ নম্বর, মৌজা নম্বর, খতিয়ান নম্বর, বাট্টা নম্বর, এরিয়া নম্বর
জমির ভৌগোলিক পরিচয় ও সনাক্তকরণে এগুলো অপরিহার্য। -
✅ জমির দখলদারের নাম, ঠিকানা, পিতা ও মাতার নাম
বর্তমানে জমি কে ব্যবহার করছেন বা দখলে রেখেছেন তা উল্লেখ থাকে। -
✅ জমির অবস্থা, পরিমাণ ও সীমানা চিহ্ন
জমিটি কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে (চাষযোগ্য, বসতভিটা, পতিত ইত্যাদি), কতটুকু জায়গা, এবং তার চারপাশের সীমা কী—এসবই স্পষ্টভাবে লেখা থাকে। -
✅ জমির মালিকের নাম, ঠিকানা ও পিতার নাম
প্রকৃত মালিকের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। -
✅ খাজনা নির্ধারণ সংক্রান্ত তথ্য (28, 29, 30 বিধি অনুযায়ী)
সংশ্লিষ্ট বিধি অনুসারে সরকার নির্ধারিত খাজনার পরিমাণ উল্লেখ করা থাকে। -
✅ খাজনা বৃদ্ধির কারণের বিবরণ
যদি জমির খাজনা বাড়ে, তার কারণ যেমন ভূমি শ্রেণি পরিবর্তন বা উন্নয়ন, তাও উল্লেখ থাকে। -
✅ ২৬ ধারা মোতাবেক নির্ধারিত খাজনা
২৬ ধারা অনুসারে নির্ধারিত অতিরিক্ত বা সংশোধিত খাজনা উল্লেখ থাকে। -
✅ নিজস্ব এবং ইজারা কৃত জমির বিবরণ
মালিকানা জমির পাশাপাশি কেউ যদি অন্যের জমি ইজারায় নিয়ে ব্যবহার করেন, সেটার বিবরণও যুক্ত থাকে।
ℹ️ কেন খতিয়ান গুরুত্বপূর্ণ?
খতিয়ান ছাড়া জমির মালিকানা আইনগতভাবে প্রমাণ করা কঠিন। জমি কেনাবেচা, নামজারি, হালনাগাদ রেকর্ড, ব্যাংক লোন, আদালতে প্রমাণ—সবক্ষেত্রেই খতিয়ান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া কোনো প্রকার জমি জালিয়াতি ঠেকাতেও খতিয়ান একটি শক্তিশালী দলিল।
ইমরান