ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নতুনভাবে নামজারি করতে এই ৭টি ডকুমেন্টস থাকলে আপত্তি করবে না এসিল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৯:৫২, ২১ মে ২০২৫

নতুনভাবে নামজারি করতে এই ৭টি ডকুমেন্টস থাকলে আপত্তি করবে না এসিল্যান্ড

ছবি: প্রতীকী

নামজারি করার জন্য অনেকেই আবেদন করেন, কিন্তু ডকুমেন্টস ঘাটতির কারণে তাদের আবেদন এসিল্যান্ড কর্তৃপক্ষ থেকে ‘নামঞ্জুর’ বা ‘স্থগিত’ হয়ে যায়। ফলে তারা পড়ে যান হয়রানি ও দুশ্চিন্তায়। অথচ আগেই যদি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখা হয়, তাহলে নামজারির প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ ও সরল হতে পারে।

নামজারি মানে হলো—পূর্ববর্তী মালিকের থেকে বর্তমান মালিকের নামে জমির খতিয়ান হালনাগাদ করা। এটি একটি আইনগত প্রক্রিয়া, যা ছাড়া জমির প্রকৃত মালিকানা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। আপনি জমি যেভাবেই পেয়ে থাকুন—ক্রয়, দান, হেবা, উত্তরাধিকার বা আদালতের রায় অনুযায়ী—সেই জমির মালিকানা স্বীকৃতি পেতে হলে অবশ্যই নামজারি করতে হবে।

নতুনভাবে নামজারি করতে গেলে ৭টি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস অবশ্যই আপনার সংগ্রহে থাকতে হবে। এদের যেকোনো একটি না থাকলে আপনার আবেদনটি স্থগিত হয়ে যাবে, এবং এসিল্যান্ড অফিস থেকে কারণ দর্শানো হবে। ফলে আবার নতুন করে ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে আবেদন করতে হবে, যা সময় ও ভোগান্তি বাড়ায়।

এই সাতটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস হলো—

প্রথমত, জমির মূল দলিল। আপনি যে উপায়ে জমির মালিক হয়েছেন, সেই ভিত্তির দলিলটি (যেমন: বিক্রয়, হেবা, দান, বা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া দলিল) অবশ্যই রেজিস্ট্রি হওয়া লাগবে এবং তা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, বায়া দলিল বা আগের মালিকের দলিল। আপনি যাঁর কাছ থেকে জমি পেয়েছেন, তিনি কীভাবে মালিক হয়েছেন—তার প্রমাণপত্র হিসেবে তাঁর দলিলের ফটোকপি বা সার্টিফায়েড কপি রাখতে হবে।

তৃতীয়ত, সর্বশেষ রেকর্ড খতিয়ান। আপনার এলাকার সর্বশেষ রেকর্ড যেটি হয়েছে (যেমন: আরএস, বিআরএস), সেটি জমির প্রকৃত মালিকানা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি জমিটি আপডেট খতিয়ানে না থাকে, তাহলে পরবর্তীতে বিরোধের সৃষ্টি হতে পারে।

চতুর্থত, ভূমি উন্নয়ন করের দাখিলা রসিদ। এটি জমির খাজনা দেওয়ার রসিদ, যাকে ডিসিআরও বলা হয়। আপনি জমি হস্তান্তরের পরে খাজনা না দিয়ে থাকলেও, পূর্ববর্তী মালিকের শেষ খাজনার রসিদটি হলেও জমা দিতে হবে। এটি প্রমাণ করে জমিটি সরকারিভাবে নিয়মিতভাবে খাজনা দেওয়া হচ্ছে।

পঞ্চমত, পাসপোর্ট সাইজের ছবি। আবেদনকারীর একটি ল্যাব প্রিন্ট পাসপোর্ট সাইজের ছবি অবশ্যই দিতে হবে, যা দীর্ঘস্থায়ী ও সরকারি কাজে গ্রহণযোগ্য।

ষষ্ঠত, একটি ব্যক্তিগত ও সচল মোবাইল নম্বর, যেটি অবশ্যই রেজিস্ট্রেশনকৃত হতে হবে। এই নম্বরে ভূমি অফিস থেকে এসএমএস পাঠানো হবে, যেমন—আবেদন গৃহীত হয়েছে কি না, কোনো আপত্তি আছে কি না ইত্যাদি।

সপ্তমত, যদি সম্পত্তি ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া হয়, তাহলে অবশ্যই আপোষ বন্টননামার দলিল দিতে হবে। সব ওয়ারিশদের মধ্যে লিখিতভাবে সম্পত্তি বণ্টনের দলিল রেজিস্ট্রি করতে হবে। কেউ যদি আপোষ না করে, তাহলে আদালতের মাধ্যমে বাটোয়ারা মামলা করে সেই রায়ের কপি জমা দিতে হবে।

এই সাতটি কাগজপত্র পূর্ণাঙ্গ থাকলে এসিল্যান্ড কোনো আপত্তি তুলবেন না এবং আপনার নামজারি প্রক্রিয়াটি স্বল্প সময়েই সম্পন্ন হবে। কিন্তু কোনো একটিতেও ঘাটতি থাকলে সেটি ফেরত দেওয়া হবে, অথবা আপনাকে নতুন করে আবেদন করতে হবে, যা সময়সাপেক্ষ এবং বিড়ম্বনার।

সবশেষে, মনে রাখা দরকার, নামজারি মানেই আপনার নামে সরকারি খতিয়ান—যেটি জমির মালিকানার চূড়ান্ত স্বীকৃতি। এটি না থাকলে জমির ওপর আপনার দাবি ভবিষ্যতে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তাই দেরি না করে, প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে নির্ভুলভাবে নামজারির আবেদন করুন।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=x9M0kJJF3vs

রাকিব

×