
ছবি: সংগৃহীত
দ্রুতগতির এই জীবনে নানা চাপ, হতাশা ও অনিশ্চয়তার কারণে অনেকেই মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন। তবে ভালো খবর হচ্ছে, কিছু সহজ ও কার্যকর উপায় অবলম্বন করে মানসিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা।
নিচে মানসিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার এমনই কয়েকটি উপায় তুলে ধরা হলো:
১. নিয়মিত আত্মবিশ্লেষণ ও ইতিবাচক চিন্তা চর্চা করুন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিজের দুর্বলতা ও ভয়কে চিহ্নিত করে সেগুলো নিয়ে সচেতন হওয়া মানসিক সুস্থতার প্রথম ধাপ। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট নিজের ভেতরের অনুভূতির সঙ্গে কথা বলুন এবং ইতিবাচক চিন্তাকে প্রাধান্য দিন। নেগেটিভ চিন্তাগুলো লিখে ফেললে সেগুলোর প্রভাব কমে।
২. শারীরিক ব্যায়াম ও নিয়মিত ঘুম গুরুত্বপূর্ণ।
শরীর সুস্থ থাকলে মনও অনেকটাই চাঙ্গা থাকে। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম, এবং রাতে ৬–৮ ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক প্রশান্তিতে বড় ভূমিকা রাখে। ঘুমের অভাব মন খারাপ ও উদ্বেগ বাড়াতে পারে।
৩. পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলুন।
অনেকেই মানসিক দুর্বলতা গোপন রাখেন, যা আরও বিপজ্জনক হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা -এর তথ্যমতে, পারিবারিক বা বন্ধুত্বপূর্ণ আলাপচারিতা বিষণ্নতা দূর করতে সহায়ক। প্রয়োজনে কাউন্সেলিং গ্রহণ করাও একান্ত প্রয়োজন হতে পারে।
৪. ছোট ছোট সফলতা উদ্যাপন করুন।
যেকোনো কাজের সামান্য অর্জনকেও উদ্যাপন করা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রতিদিন একটি করে লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা পূরণ করার চেষ্টা করলে মনের জড়তা ও হীনমন্যতা ধীরে ধীরে কমে যায়।
৫. ধর্মীয় ও আত্মিক চর্চা মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।
নিয়মিত নামাজ, প্রার্থনা, মেডিটেশন বা ধ্যান চর্চা করলে মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব চর্চা মনকে স্থির করতে এবং জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
মানসিক দুর্বলতা কোনো লজ্জার বিষয় নয় - বরং এটি একটি সাধারণ মানবিক অবস্থা। সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস এবং পারস্পরিক সহানুভূতির মাধ্যমে এই দুর্বলতা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে সমাজে সচেতনতা ও সহানুভূতির সংস্কৃতি গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।
মিরাজ খান