ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য!

প্রকাশিত: ২১:১৮, ২১ মে ২০২৫

ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য!

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির

পাকিস্তানের আগের সেনাপ্রধানদের অধিকাংশই এসেছেন সামরিক, উচ্চপদস্থ আমলা বা প্রভাবশালী পরিবার থেকে। তবে আসিম মুনিরের পথচলা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী। তিনি বেড়ে উঠেছেন এক সাধারণ পরিবারে। তার পিতা ছিলেন একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং পাশাপাশি মসজিদের ইমাম। ১৯৪৭ সালে তিনি ভারতের পাঞ্জাবের জালান্দার থেকে পাকিস্তানে চলে আসেন।

ভারতের বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে পদোন্নতি দিয়ে ফিল্ড মার্শাল ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। এ ঘোষণার পর তিনি নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছেন, বিশেষ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তার শৈশব, শিক্ষা ও ক্যারিয়ারের পেছনের গল্প তুলে ধরছে।

আসিম মুনির রাওয়ালপিন্ডির মারকাজ মাদরাসা দারুল তাওহীদে নিজের শিক্ষাজীবন শুরু করেন, অর্থাৎ তার বেড়ে ওঠা ছিল ধর্মীয় পরিবেশে। পরবর্তীতে তিনি অ্যাবাটাবাদের পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন এবং ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টের ২৩তম ব্যাটালিয়নে কমিশনপ্রাপ্ত হন।

সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালনের এক পর্যায়ে তাকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়, যেখানে তিনি কোরআন মুখস্থ করে একজন হাফেজ হন। তার বক্তব্যে প্রায়ই কোরআনের আয়াত উদ্ধৃতির মাধ্যমে তিনি ধর্মীয় জ্ঞানের প্রমাণ দেন। উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি তিনি আরবিতেও দক্ষতার সঙ্গে কথা বলতে পারেন।

পাকিস্তানের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র সেনাপ্রধান যিনি মাদরাসা থেকে শিক্ষাজীবন শুরু করে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত হয়েছেন। তার সামরিক ক্যারিয়ার শুরু হয় জেনারেল জিয়াউল হকের আমলে, ১৯৮৬ সালে। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০১৮ সালে আইএসআইয়ের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান।

তবে ওই সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে মাত্র ৮ মাসেই পদচ্যুত হন তিনি। এই দ্বন্দ্ব এতটাই প্রকট ছিল যে ইমরান খান প্রকাশ্যে আসিম মুনিরের সমালোচনা করেন।

ধর্মীয় পটভূমি, সাধারণ পরিবারের পেছনের ইতিহাস এবং দীর্ঘ সামরিক অভিজ্ঞতা—সব মিলিয়ে আসিম মুনিরের যাত্রা পাকিস্তানের সামরিক ইতিহাসে এক ব্যতিক্রমী অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ফারুক

×