
ছবি: সংগৃহীত।
পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধপরবর্তী উত্তেজনার মধ্যে ভারতজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন একজন নারী ইউটিউবার — জ্যোতি মালহোত্রা।
তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ তুলেছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বলা হচ্ছে, তিনি ইউটিউব ভিডিও বানানোর আড়ালে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর হয়ে কাজ করতেন।
‘ট্রাভেল উইথ জো’ নামের ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে বিশ্ব ভ্রমণের ভিডিও প্রকাশ করতেন জ্যোতি মালহোত্রা। হরিয়ানার বাসিন্দা এই নারী ইউটিউবারের চ্যানেলে প্রায় ৪ লাখ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে, আর আপলোডকৃত ভিডিওর সংখ্যা প্রায় ৪৮৭টি।
তবে প্রশ্ন উঠেছে— বিশ্বের এত দেশ ঘোরা ও ভিডিও তৈরির অর্থ জ্যোতি কোথা থেকে পেতেন? ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, তার আয়-ব্যয়ের হিসাব মিলছে না, এবং অজানা উৎস থেকে আর্থিক সহায়তা পেতেন জ্যোতি।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ সফর, মার্চে কাশ্মীরের পেহেলগাম সফর এবং পরবর্তীতে পাকিস্তান ও চীন সফরের বিষয়টি ভারতের গোয়েন্দাদের নজরে আসে। পেহেলগামে সফরের এক মাস পরই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে, যা গোয়েন্দাদের সন্দেহ ঘনিভূত করে।
ভারতের গোয়েন্দা সূত্র দাবি করেছে, জ্যোতির পরিচয় হয় পাকিস্তানি কূটনীতিক আহসানুর রহিমের সঙ্গে, যিনি দিল্লির পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। এই যোগাযোগের সূত্রেই জ্যোতিকে সন্দেহভাজন হিসেবে নজরে আনা হয়।
১৩ মে আহসানুর রহিমকে ‘অপাঞ্জেয় কর্মকাণ্ডে’ জড়িত থাকার অভিযোগে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয় মোদি সরকার। এরপরই জ্যোতিকে আটক করে পুলিশ, এবং ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
ভারতীয় তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, জ্যোতির মোবাইল ও ল্যাপটপ থেকে বেশ কয়েকটি ডিজিটাল প্রমাণ,
বিশেষ করে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে আইএসআই হ্যান্ডলার আলী হাসান নামে একজনের সঙ্গে সাংকেতিক ভাষায় কথোপকথন মিলেছে।
তদন্তকারীরা বলছে, “তিনি এনক্রিপ্টেড প্ল্যাটফর্মে আইএসআই এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং ভারতের অভ্যন্তরে কাজ করা আন্ডারকভার এজেন্টদের তথ্য আদান-প্রদান করতেন।”
জ্যোতির বিরুদ্ধে ভারতের অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫২ ধারায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, তিনি শুধু পর্যটক হিসেবে নন, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন ধর্মীয় ও কৌশলগত স্থানে ভ্রমণ করেছেন।
নুসরাত