ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যে কারণে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে

প্রকাশিত: ১৭:৩০, ২১ মে ২০২৫

যে কারণে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা (এনএইচএস) জানিয়েছে, এমন কিছু মানুষের গ্রুপ রয়েছে যারা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকিতে বেশি থাকতে পারেন। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন থাকলে এই ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পায়।

এনএইচএস-এর তথ্য অনুযায়ী, উচ্চ রক্তচাপ হল এমন একটি অবস্থা যেখানে ধমনীর দেয়ালের প্রতি রক্তের চাপ দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত থাকে। ধমনীগুলো হলো রক্তবাহী নালী যা হৃদয় থেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত পরিবহন করে। সাধারণত রক্ত চলাচলের জন্য কিছু চাপ থাকা প্রয়োজন হলেও, অতিরিক্ত চাপ শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ রক্তচাপ থাকার ফলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকসহ অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এনএইচএস বলছে, রক্তচাপ সাধারণত তখন উচ্চ বলে গণ্য হয় যখন বারংবার পরিমাপ করা রক্তচাপ ১৪০/৯০ মি.মি. পারদ বা তার বেশি হয়।

আপনি নিম্নলিখিত পরিস্থিতিগুলোর মধ্যে থাকলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেশি থাকতে পারে: কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, ডায়াবেটিস রোগী, কুশিংস সিন্ড্রোমের মত হরমোনজনিত রোগে আক্রান্ত (যখন শরীর অতিরিক্ত স্টেরয়েড হরমোন উৎপাদন করে)।

কিছু মেডিকেশন যেমন ওরাল কনট্রাসেপ্টিভ (গর্ভনিরোধক) ব্যবহার করেন।

এনএইচএস পরামর্শ দিয়েছে, “যদি মনে হয় আপনার ওষুধ রক্তচাপ বাড়াচ্ছে, তবে দ্রুত একজন স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে কথা বলুন।”

ঝুঁকিকে বাড়ায় এমন অন্যান্য কারণ: উচ্চ চর্বিযুক্ত খাদ্যগ্রহণ, উচ্চ লবণযুক্ত খাবার খাওয়া, শারীরিক অনুশীলনের অভাব, ওজন বেশি থাকা, ধূমপান করা, অতিরিক্ত মদ্যপান, মানসিক চাপ, বয়স বাড়া (বয়স বাড়ার সঙ্গে ঝুঁকি বেড়ে যায়), পারিবারিক ইতিহাসে উচ্চ রক্তচাপ থাকা, আফ্রো-ক্যারিবিয়ান বা দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত হওয়া।

দুর্ভাগ্যবশত, উচ্চ রক্তচাপ অনেক সময় কোনও লক্ষণ দেয় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে: মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা বা দ্বিগুণ দেখা, নিয়মিত নাক থেকে রক্ত পড়া, শ্বাসকষ্ট।

যদি উচ্চ রক্তচাপ চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে স্ট্রোক, হৃদরোগের পাশাপাশি নিম্নলিখিত সমস্যা হতে পারে: ধমনীর রক্ত জমাট বাঁধা (অ্যার্টেরিয়াল থ্রোম্বোসিস), পেটের বড় ধমনীর অ্যানিউরিজম, কিডনি রোগ, ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া (রক্তনালীর কারণে স্নায়ু রোগ)।

এনএইচএস জনসাধারণকে বারংবার সতর্ক করছে: নিয়মিত শরীরচর্চা করুন, মদ্যপান সীমিত করুন, কম চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করুন, লবণের ব্যবহার কমিয়ে দিন, ওজন বেশি হলে কমানোর চেষ্টা করুন, ক্যাফেইন গ্রহণ সীমিত করুন, যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন এর মতো শিথিলকরণ পদ্ধতি গ্রহণ করুন। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

এনএইচএস-এর সতর্কতা অনুযায়ী, এই সাধারণ কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিদিনের জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা জরুরি।

মিরাজ খান

×