
ছবি: সংগৃহীত।
ডায়াবেটিস এখন আর শুধু বয়স্কদের রোগ নয়। আধুনিক জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এবং জিনগত কারণে শিশুরাও টাইপ-১ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে—এই বয়সে অনেক সময় লক্ষণগুলো এতটাই সূক্ষ্ম হয় যে তা বাবা-মা বা অভিভাবকদের নজর এড়িয়ে যায়। অথচ সময়মতো শনাক্ত না হলে এই রোগ শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
চলুন জেনে নিই এমন ৪টি সাধারণ অথচ উপেক্ষিত লক্ষণ, যা শিশুদের ডায়াবেটিসের পূর্বাভাস হতে পারে।
১. অতিরিক্ত পিপাসা ও বারবার প্রস্রাব করা
আপনার সন্তান কি অস্বাভাবিক রকম বারবার পানি খাচ্ছে? রাতে ঘুমের মাঝেও বারবার প্রস্রাব করার জন্য উঠে পড়ছে? এটি হতে পারে টাইপ-১ ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীর তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দিতে চায়, ফলে অতিরিক্ত প্রস্রাব ও তার সঙ্গে পানিশূন্যতা দেখা দেয়।
২. হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া
যদি দেখা যায়, কোনো ডায়েট বা এক্সারসাইজ ছাড়াই আপনার সন্তানের ওজন দ্রুত কমে যাচ্ছে, তবে সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে ইনসুলিনের ঘাটতির কারণে শরীর যথাযথভাবে গ্লুকোজ ব্যবহার করতে পারে না, ফলে শরীর নিজেই পেশি ও চর্বিকে শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে, যার ফলে ওজন কমে যায়।
৩. অতিরিক্ত ক্ষুধা ও ক্লান্তি
ডায়াবেটিস আক্রান্ত শিশুরা প্রায়শই অতিরিক্ত ক্ষুধার্ত থাকে, কারণ গ্লুকোজ ঠিকভাবে শরীরে প্রবেশ না করায় কোষগুলো পর্যাপ্ত শক্তি পায় না। এতে শরীর দুর্বল বোধ করে এবং শিশুটি সারাক্ষণ ক্লান্তি অনুভব করে। এমনকি খেলাধুলা বা ছোটখাটো কাজেও হাঁপিয়ে পড়ে।
৪. ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া ও সংক্রমণ
শিশুর শরীরে যদি কোনো কাটাছেঁড়া বা ক্ষত সহজে শুকাতে না চায়, কিংবা মুখে বারবার ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা স্কিন ইনফেকশন দেখা যায়, তাহলে তা ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে। উচ্চ রক্তশর্করা সংক্রমণ প্রতিরোধক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়।
শিশুর শরীরের ছোট ছোট পরিবর্তনগুলোকে অবহেলা না করে সতর্ক হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। উপরের যেকোনো একটি বা একাধিক লক্ষণ দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সময়মতো শনাক্ত হলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, এবং শিশু একটি স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবন যাপন করতে পারে।
নুসরাত