ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দুর্বল মনের মানুষ চিনবেন যেভাবে

প্রকাশিত: ১৫:৩১, ২১ মে ২০২৫

দুর্বল মনের মানুষ চিনবেন যেভাবে

ছবি: সংগৃহীত

আমাদের চারপাশে অনেক মানুষকে স্বাভাবিক মনে হলেও, কেউ কেউ ভিতরে ভেতরে মানসিকভাবে দুর্বলতায় ভুগে থাকেন। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, এ ধরনের মানুষের কিছু আচরণগত বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়, তারা মানসিকভাবে কতটা ভঙ্গুর।

দুর্বল মনের মানুষের কিছু সাধারণ লক্ষণ, যা তাদের প্রতিদিনের কথাবার্তা, সিদ্ধান্তগ্রহণ, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ও আবেগের ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ পায়। নিচে এমন কয়েকটি লক্ষণ তুলে ধরা হলো:

১. নিজেকে সবসময় হীন মনে করা।
মনোবিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্বল মনের মানুষ প্রায়ই নিজেদেরকে অন্যদের চেয়ে কম যোগ্য বা কম মূল্যবান মনে করেন। তারা নিজের অর্জনকে গুরুত্ব দেন না এবং সবসময় অন্যদের সঙ্গে তুলনা করে হতাশ হয়ে পড়েন।

২. চাপে ভেঙে পড়া বা সিদ্ধান্তহীনতা।
দুর্বল মানসিকতার ব্যক্তিরা হঠাৎ চাপের মুখে ভেঙে পড়েন বা সহজ সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করেন। তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে হতাশ হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।

৩. নেগেটিভ চিন্তা ও অতিরিক্ত উদ্বেগ।
এই ধরনের ব্যক্তিরা সবসময় খারাপ কিছু ঘটে যাবে মনে করে ভয় পান। তারা সামান্য ঘটনা নিয়েও অতিরিক্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং খারাপ পরিণতির আশঙ্কায় স্থির থাকতে পারেন না।

৪. আত্মসমালোচনার প্রবণতা বেশি।
মনোবিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্বল মনের মানুষেরা প্রায়ই নিজেদের কঠোর সমালোচক হন। কোনো ভুল হলে তারা নিজেদের খুব বেশি দোষ দেন এবং তা থেকে দ্রুত বের হতে পারেন না।

৫. অন্যের প্রশংসা সহ্য না করা বা ঈর্ষান্বিত হওয়া।
তাদের আত্মমর্যাদাবোধ দুর্বল হওয়ায় অন্যের সফলতা সহজে মেনে নিতে পারেন না। এতে তারা মনে মনে ঈর্ষা অনুভব করেন এবং নিজেদের ব্যর্থতা আরও তীব্রভাবে উপলব্ধি করেন।

৬. সহজে ভেঙে পড়া ও আবেগপ্রবণতা।
দুর্বল মনের মানুষ প্রায়ই ছোটখাটো বিষয়েও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তারা সহজেই কেঁদে ফেলেন বা রেগে যান এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কষ্ট হয়।

৭. মানসিক নির্ভরতা অন্যের উপর।
তারা প্রায়শই সিদ্ধান্ত গ্রহণে অন্যের পরামর্শ বা সম্মতির উপর নির্ভর করেন। নিজস্ব মতামত প্রকাশে দ্বিধা অনুভব করেন এবং একা কিছু করতে সাহস পান না।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, দুর্বল মনের মানুষকে সহযোগিতা করা এবং আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে উৎসাহিত করা অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে কাউন্সেলিং, মেডিটেশন এবং ইতিবাচক পরিবেশে থাকার মাধ্যমে মানসিক দৃঢ়তা বাড়ানো সম্ভব।

মানসিক দুর্বলতা কোনো অপরাধ নয় - এটি একটি ঠিক করার মতো অবস্থা। বুঝে সহানুভূতির মাধ্যমে এগিয়ে এলে পরিবার, বন্ধু এবং সমাজের সকলে মিলে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গড়া সম্ভব।

মিরাজ খান

×