
ছবি: সংগৃহীত
খুজদারে স্কুলবাসে আত্মঘাতী হামলায় নিহত অন্তত পাঁচজন, আহত অর্ধশতাধিক
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তানের খুজদার জেলায় একটি স্কুলবাসে আত্মঘাতী হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩৮ জন। নিহতদের মধ্যে তিনজন শিশু ও দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক রয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটে। সরকারি কর্মকর্তা ইয়াসির ইকবাল দাশতি জানান, হামলার সময় আর্মি পাবলিক স্কুলের বাসটি শিশুদের নিয়ে যাচ্ছিল। এই সময় এক আত্মঘাতী হামলাকারী বাসটি লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটায়।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে এই হামলার নিন্দা জানিয়ে দাবি করেছে, "এই হামলায় ভারতের সন্ত্রাসী দালালদের হাত রয়েছে।" যদিও এ সংক্রান্ত কোনও প্রমাণ এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এক বিবৃতিতে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসীরা এই বর্বর হামলা চালিয়েছে।" নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
হামলার তীব্রতা বিবেচনায় নিয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “শত্রুরা নিষ্পাপ শিশুদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। এই হামলার মাধ্যমে দেশকে অস্থির করার অপচেষ্টা চলছে।”
প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ বেলুচিস্তান প্রদেশে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সরকারের সংঘাত চলছে। অনেক হামলার দায় স্বীকার করে আসছে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। পাকিস্তান দাবি করে, এই সংগঠনটি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা থেকে সহায়তা পায়। তবে নয়া দিল্লি এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। ইসলামাবাদ থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক কামাল হায়দার জানান, পাকিস্তান সরকার এই হামলাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে।
তিনি বলেন, “বিএলএ সাধারণত এই ধরনের হামলার দায় স্বীকার করে। পাকিস্তান মনে করে, এই সংগঠনগুলো ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা থেকে অর্থ ও সহায়তা পায়।” এটি বেলুচিস্তানে প্রথম হামলা নয়। এর আগে মার্চ মাসে একটি ট্রেনে হামলা চালিয়ে ৩৩ জনকে হত্যা করে বিএলএ যোদ্ধারা, যাদের বেশিরভাগই ছিল সেনা সদস্য।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে হামলার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েকদিন আগেই বেলুচিস্তানের কিলা আবদুল্লাহ এলাকায় একটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে চারজন নিহত হয়। তবে সাধারণত বেলুচিস্তানে স্কুলশিশুদের লক্ষ্য করে হামলার ঘটনা বিরল। তবে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ অন্যান্য এলাকায় অতীতে এই ধরনের হামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তেহরিকে তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) খাইবার পাখতুনখোয়ার পেশোয়ারে অবস্থিত আর্মি পাবলিক স্কুলে হামলা চালিয়ে ১৪০ জনের বেশি শিশু হত্যা করে।
শহীদ