ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রাজশাহীর ঐতিহাসিক ’শুকান দিঘি’ আজ মৃতপ্রায়

তানভীরুল আলম তোহা, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, রাজশাহী

প্রকাশিত: ২১:৫৪, ২১ মে ২০২৫

রাজশাহীর ঐতিহাসিক ’শুকান দিঘি’ আজ মৃতপ্রায়

ছবি: জনকণ্ঠ


বিশুদ্ধ বায়ু ও ধুলিকণামুক্ত সবুজ শহর হিসেবে যেমন খ্যাতি রয়েছে রাজশাহীর তেমনই খাল-বিল, জলাশয়, দিঘিসহ পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক ঐতিহাসিক বিষয়বস্তুও রয়েছে এই রাজশাহীতেই। তার মাঝে 'শুকান দিঘি' অন্যতম। 

তবে সময়ের ব্যবধানে সেই ঐতিহাসিক শুকান দিঘি আর মৃতপ্রায়। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহী মহানগরীর ১৫ নং ওয়ার্ড সপুরা এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ও সংরক্ষিত 'শুকান দিঘি' ভরাট করে সেখানে প্লট তৈরি ও ইটের পিলার বসানো হচ্ছে। প্রায় ১০ বিঘা আয়তনের এ দিঘিটি বর্তমানে ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর, হারিয়েছে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশগত ভারসাম্য।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের আগস্টে রাজশাহীর ২২টি পুকুর সংরক্ষণের বিষয়ে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানিতে হাইকোর্ট শুকান দিঘিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশ বাস্তবায়নে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিগত সরকারের আমলে এখানে মাছচাষ করতেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা এবং তারাই দিঘি ভরাটে জড়িত। ইতোমধ্যে দিঘির পাড় ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে কয়েকটি দোকান ও আবাসিক প্লট। জায়গাটি দখলের উদ্দেশ্যে চারিদিকে বালু ভরাটকরে কংক্রিটের প্রাচীর ঘেরাসহ বাঁশ, পলিথিন ও বিভিন্ন আবর্জনা ফেলে পরিবেশকে আরও দূষিত করা হচ্ছে।

এলাকাবাসীদের একজন জানান, “আমরা চাচ্ছি, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এবং প্রশাসন যেন আদালতের রায় বাস্তবায়ন করে দ্রুত এই দিঘি রক্ষা করে। নইলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এক কঠিন বাস্তবতার মুখে পড়বে।

এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এ একাধিক বার ফোন করলে ফোন বন্ধ পাওয়া জায়। 

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এক সূত্র জানায়,
“আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। তবে এটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গা হওয়ায় কিছু জটিলতা রয়েছে। তবুও আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সচেতন মহল মনে করছেন, রাজশাহীর পরিবেশ রক্ষায় এ ধরনের জলাধার সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপের মাধ্যমে দিঘিটি পুনরুদ্ধার না করা হলে এর স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।

সবার দাবি—‘শুকান দিঘি’কে ফিরিয়ে দেওয়া হোক তার প্রকৃত রূপে, পরিবেশ রক্ষায় হোক একযোগে সচেতন উদ্যোগ এমনটায় প্রত্যাশা সকলের।

সাব্বির

×