ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

অতিরিক্ত ঘামছেন? জিনগত সমস্যার ইঙ্গিত?

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ৭ মে ২০২৫

অতিরিক্ত ঘামছেন? জিনগত সমস্যার ইঙ্গিত?

গরম পড়তেই অনেকেই অতিরিক্ত ঘামের সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন। কেউ কেউ আবার জানান, কোনো কারণ ছাড়াই ঘাম ঝরে পড়ছে শরীর থেকে, এমনকি গোসলের পরও। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, এই সমস্যা কেবল পরিবেশজনিত নয়, বরং এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে জিনগত কারণ কিংবা হরমোনজনিত অসামঞ্জস্য। চলুন জেনে নেওয়া যাক, হাইপারহাইড্রোসিস বা অতিরিক্ত ঘাম ঠিক কেন হয়, কাদের হয় এবং এর প্রতিকার কী হতে পারে।

উষ্ণ আবহাওয়ায় কিছুক্ষণ থাকলে বা কোন ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করলে মানুষের শরীরে ঘাম হওয়া খুব স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই শরীরের নির্দিষ্ট কোন জায়গায় যদি মাত্রাতিরিক্ত ঘাম সৃষ্টি হয়, সেক্ষেত্রে করণীয় কি?

অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীরে দুর্গন্ধ তৈরি হওয়া একজন ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে অপদস্থ অবস্থায় ফেলতে পারে। অনেকে আছেন যারা গরমে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘেমে থাকেন। এমনকি গোসল করার পরও সারা শরীর থেকে অনবরত ঘাম ঝরতে থাকে। অতিরিক্ত এই ঘামকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় হাইপারহাইড্রোসিস বলা হয়।

অতিরিক্ত ঘাম বা হাইপারহাইড্রোসিস কিন্তু সবার হয় না। এই সমস্যা কিছুটা জিনগত হতে পারে। যাদের সিম্প্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র অতি সক্রিয়, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঘামার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড হরমোনের সমতা বিঘ্নিত হলেও অতিরিক্ত ঘাম হয়।

তবে কিছু নিয়ম মানলে অতিরিক্ত ঘাম থেকে মুক্তি পেতে পারেন। অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকলে হালকা রঙের সুতি এবং ঢিলে ঢালা পোশাক পড়া উচিত। এতে ঘাম কিছুটা কম হবে। এছাড়া তীব্র গরমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। তাই প্রচুর পানি পান করতে হবে। পানি শূন্যতা দূর করতে পানির পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের মৌসুমী ফলের জুস ও ডাবের পানি খেতে পারেন।


অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত খাবার তালিকায় শাকসবজি ও উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার রাখা উচিত। যেমন ওটস ও শস্যজাতীয় খাবার রাখলে হজম ভালো হয়। এতে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অত্যাধিক ঘাম হয় না।
 

এমন কিছু ফল রয়েছে যেগুলোতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। যেমন আপেল, আঙ্গুর, তরমুজ, আনারস ও কমলা। এই ফলগুলো বেশি বেশি খেলে শরীরে পানিশূন্যতা যেমন দূর হয়, তেমনি শরীরে বাজে গন্ধ তৈরি হয় না।

অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা হলে ক্ষেত্রবিশেষে ডার্মাটোলজিস্টরা ওষুধ গ্রহণ, বোটক্স ইনজেকশন নেয়া বা সার্জারির মাধ্যমে ঘাম তৈরি করা গ্রন্থিগুলো অপসারণ করার পরামর্শ দিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ধরনের ওষুধ গ্রহণ করা উচিত নয়।

অতিরিক্ত ঘাম আপনার জীবনের মানে প্রভাব ফেললেও, সঠিক চিকিৎসা ও নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যাকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তাই উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন এবং সুস্থ থাকুন।

 

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/2jpx8kbm

আফরোজা

×