
ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানে ভারতীয় সামরিক অভিযানে অংশ নিয়েছে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০টি যুদ্ধবিমান, এমন দাবি করেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। বুধবার তিনি দেশটির পার্লামেন্টের বাইরে সাংবাদিকদের জানান, পাকিস্তান সংযম দেখালেও ভারতের হামলায় অংশ নেওয়া পাঁচটি বিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের এই অভিযানে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের অন্তত নয়টি স্থাপনায় আঘাত হানে ভারত। এতে অন্তত ৩১ জন নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই হামলার মূল লক্ষ্য ছিল সশস্ত্র গোষ্ঠী লস্কর-ই-তইয়্যেবা (এলইটি) ও জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম)-এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এছাড়া, পাঞ্জাবের ভাওয়ালপুরে জেইএম-এর ঘাঁটি এবং মুরিদকে শহরে এলইটি-এর ঘাঁটিসহ মোট নয়টি স্থাপনায় হামলা চালানোর দাবি তাদের।
তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাঞ্জাবের শিয়ালকোট, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে এবং আজাদ কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ, বাগ ও কোটলিতে আঘাত হানে। ভারত বেসামরিক স্থাপনা, মসজিদ ও মাদরাসা নিশানা করে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের।
ভারতের ব্যবহৃত অস্ত্র ও প্রযুক্তি
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, হামলায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমরাস্ত্র ব্যবহার করেছে ভারত। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করেছে। পরিকল্পনা এমনভাবে করা হয়েছে যাতে পাকিস্তানের সেনাঘাঁটি বা সামরিক অবকাঠামো টার্গেট না হয়।
হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রসমূহের মধ্যে ছিল:
স্কাল্প ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র (Storm Shadow)
ইউরোপীয় অস্ত্র নির্মাতা এমবিডিএ’র তৈরি এই দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রাফাল যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপ করা হয়। আনুমানিক ১ হাজার ৩০০ কেজি ওজনের এই ক্ষেপণাস্ত্র সাধারণত দুর্ভেদ্য বাঙ্কার ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংসে বিশেষভাবে কার্যকর এবং শত্রুপক্ষের রাডার এড়িয়ে টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম।
হ্যামার প্রিসিশন-গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র
ফরাসি প্রতিরক্ষা কোম্পানি Safran Electronics & Defense নির্মিত এই ক্ষেপণাস্ত্র মাঝারি পাল্লার এবং মোবাইল ও স্ট্যাটিক উভয় লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে সক্ষম। এটি আকাশ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে ভূমির লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
আত্মঘাতী ড্রোন (কামিকাজি ড্রোন)
এসব ড্রোন নজরদারি, লক্ষ্য নির্ধারণ এবং হামলার জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলো নির্ধারিত লক্ষ্যের ওপর ঘুরে বেড়াতে পারে এবং নিজ থেকেই বা রিমোট নিয়ন্ত্রণে আঘাত হানতে পারে।
স্কাল্প ক্ষেপণাস্ত্র এর আগে ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে। ইউক্রেন এই ক্ষেপণাস্ত্র পাওয়ার পর রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আক্রমণ চালাতে সক্ষম হয়। ভারতের ক্ষেত্রে, এই প্রযুক্তি তাদের কৌশলগত অভিযানে নির্ভুল এবং কার্যকর আঘাত হানার সক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি করেছে।
সূত্র: ডন ও টাইমস অব ইন্ডিয়া
রাকিব