ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

দৃকে চলছে আলোকচিত্রে অদম্য নারীদের অগ্রযাত্রার গল্প

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:১৮, ২৯ নভেম্বর ২০২২

দৃকে চলছে আলোকচিত্রে অদম্য নারীদের অগ্রযাত্রার গল্প

দৃক গ্যালারিতে ‘অদম্য পরিবর্তনের প্রেরণা জোগানো নারীদের গল্প

দুনিয়াজুড়েই যেন একই চিত্র। নারীর চলার পথে ছড়িয়ে থাকে অজস্র প্রতিকূলতা। বালিকা থেকে তরুণী কিংবা পরিণত বয়সের নারী-সকলকে পেরুতে হয় প্রতিবন্ধকতা। শিকার হতে হয় লিঙ্গ বৈষম্যের। খেলার মাঠ থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে গড়ে নিতে হয় অবস্থান। আর প্রতিকূলতাকে পাড়ি দিয়ে গন্তব্য খুঁজে নেওয়া সেসব অদম্য নারীর গল্প উঠে এসেছে আলোকচিত্রে। ছবিগুলো ঝুলছে পান্থপথের দৃক গ্যালারিতে। এখানে চলছে ‘অদম্য-পরিবর্তনের প্রেরণা জোগানো নারীদের গল্প’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী।

২০০০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো প্রতিযোগিতার পুরস্কৃত ছবি থেকে নির্বাচিত কিছু আলোকচিত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রদর্শনী। সেসব ছবিতে মেলে ধরা হয়েছে পৃথিবীজুড়ে নারীর অদম্যতা এবং সংকটকে পাশ কাটিয়ে তাদের জয়যাত্রার গল্প। যৌথভাবে প্রদর্শনীটির আয়োজন করেছে ঢাকার নেদারল্যান্ডস দূতাবাস ও দৃক পিকচার লাইব্রেরি।
প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত হয়েছে ১৫টি দেশের ১৩টি ভিন্ন ভিন্ন জাতীয়তার ১৭ আলোকচিত্রীর ক্যামেরাবন্দি নয়টি সিরিজ এবং ৮টি একক ছবি।

আলোকচিত্রীদের গভীর অন্তর্দৃষ্টিতে উপস্থাপিত হয়েছে পুরুষতন্ত্র, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, যৌন ও প্রজনন অধিকার, সমঅধিকার ও ক্ষমতায়নের সমান সুযোগের মতো বিষয়সমূহ। একুশ শতকে নারী ও লৈঙ্গিক প্রশ্নগুলো কীভাবে বিকশিত হয়েছে এবং তাদের চিত্রিত করতে গিয়ে ফটোসাংবাদিকতা নিজেই কীভাবে বিকশিত হয়েছে, তা অন্বেষণ করেছে বাছাইকৃত গল্পগুলো।
ফুটবল স্টেডিয়ামে প্রবেশের ক্ষেত্রে ইরানে নারী সমর্থকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

ফিফার চাপের কারণে সীমিত সংখ্যক নারীকে প্রবেশের অধিকার দেওয়া হলেও বেশিরভাগ ম্যাচেই নারীর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকে। গ্রেপ্তারের ঝুঁকি নিয়েও নারী ফুটবল সমর্থকরা পুরুষের ছদ্মবেশে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করে। ইরানের তেহরানে আজাদি স্টেডিয়ামের বাইরে নারীর এই প্রতিবাদ ও সংগ্রামের ছবি ‘ক্রাইং ফর ফ্রিডম’ ছবি সিরিজ তুলে ইরানের নারী আলোকচিত্রী ফোরোঘ অলায়েই ২০১৯ সালের ওয়ার্ল্ড প্রেসের প্রথম পুরস্কার জিতেছিলেন।

আন্যা বয়াজিজের ‘ফাইন্ডিং ফ্রিডম ইন দ্য ওয়াটার’ শীর্ষক সিরিজে উঠে এসেছে ভারত মহাসাগরের মুয়ুনি সৈকতে সাঁতার ও উদ্ধার কাজ শেখা কিজিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গল্প। ঐতিহ্যগতভাবেই জাঞ্জিবার দ্বীপপুঞ্জের মেয়েদের সাঁতার শেখাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এর প্রধান কারণ শালীন সাঁতারের পোশাকের অভাব। দ্য পানজি প্রজেক্ট পানিতে ডোবার উচ্চহার কমানোর লক্ষ্যে স্থানীয় নারী ও বালিকাদের সাঁতার শিখিয়ে থাকে।
‘দ্য প্রমিজ’ শীর্ষক সিরিজে ইরিনা ভারনিং তুলে ধরেছেন আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ার্সের ১২ বছর বয়সী আন্তোনেলার গল্প। ২০২০ সালের আগস্টে আন্তোনেলা শপথ নেয়, মহামারীর জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুলে ফের সশরীরে ক্লাস করতে না পারা পর্যন্ত সে তার লম্বা চুল কাটবে না। তার ভাষায়, স্কুল-জীবন ফিরে পাওয়ার বিনিময়ে সে তার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদটি উৎসর্গ করেছে। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ক্লাসে ফেরার আগে সে তার চুল  কেটে ফেলে।
আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

×