
ছবি: সংগৃহীত
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারের এসএসসি পরীায় প্রকাশিত ফলাফলে ১৩টি বিদ্যালয় থেকে কেউ পাস করেনি। এই ১৩ বিদ্যালয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৯৮ জন। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলায় তিনটি ও রংপুর, ঠাকুরগাঁও এবং গাইবান্ধা জেলায় ২টি করে বিদ্যালয় রয়েছে। এই বোর্ডে গত বছর (২০২৪) পাস না করার বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল চারটি। আর পরীক্ষার্থী ছিল ২৭ জন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মীর সাজ্জাদ আলীর পাঠানো পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা যায়।
এবার যে ১৩টি বিদ্যালয় থেকে কেউ পাস করেনি, সেই বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে: নীলফামারীর একটি- ডিমলা উপজেলার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম জেলার তিনটি- জেলা সদর উপজেলার পূর্ব কুমারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, নাগেশ্বরী উপজেলার পায়রাডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ও ফুলবাড়ী উপজেলার নাজার মামুদ উচ্চ বিদ্যালয়, রংপুর জেলার দুইটি- স্কুলের মধ্যে পীরগাছা উপজেলার রতনপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও পীরগঞ্জ উপজেলার ছোট উজিরপুর উচ্চবিদ্যালয়, গাইবান্ধা জেলার ২টি স্কুলের মধ্যে সাঘাটা উপজেলার গরিদাহা উচ্চ বিদ্যালয় ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিশ্বনাথপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়।
এছাড়া, ঠাকুরগাঁও জেলার ২টি বিদ্যালয় হলো- জেলা সদর উপজেলার সানুয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও জগন্নাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়, লালমনিরহাটের একটি স্কুলের মধ্যে সদর উপজেলার পশ্চিম বড়ুয়া রোটারী উচ্চ বিদ্যালয়, দিনাজপুর জেলার একটি হলো বীরগঞ্জ উপজেলার সাত কামার উচ্চ বিদ্যালয় এবং পঞ্চগড় জেলার একটি হলো বোদা উপজেলার ডাবর ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়।
সূত্রমতে, গতবারের (২০২৪) যে চারটি স্কুলের কেউ পাস করেনি, ওই চারটি স্কুল ছিল নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম নাগেশ্বরী উপজেলার পূর্ব সুখতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ঘোগোয়া মালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ও দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার চৌমহনী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়।
এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে একমাত্র নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গতবার ২ জন ও এবার চারজন শিক্ষার্থীর মধ্যে কেউ পাস করেননি। এই স্কুল সর্ম্পকে জানা যায়, ফেল ছাড়া পাশের মুখ দেখেনি স্কুলটি। ২০২৪ সালে এই স্কুলটি থেকে প্রথম দুই শিক্ষার্থী অংশ নেয় এসএসসি পরীক্ষায়। এবার অংশ নেয় ৪ জন। পর পর দুই বার ফলাফল শূন্য।
এই স্কুলে প্রধান শিক্ষকসহ ১২ জন শিক্ষক ও তিনজন কর্মচারী রয়েছেন। বিদ্যালয়টি একাডেমিক স্বীকৃতি পায় ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে। তবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি থাকলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত তা রহস্যেই থেকে গেছে।
স্থানীয় রবিউল ইসলাম নামের একজন বলেছেন, বিদ্যালয়টি বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকে। মাঝে মধ্যে দুই-একজন শিক্ষক-কর্মচারী আসলেও শিক্ষার্থীর দেখা মেলে না। আর যে সকল শিক্ষক রয়েছেন তারা বিভিন্ন জন ভিন্ন পেশা নিয়ে ব্যস্ত। তারা স্কুলে সময় দিতে পারেন না। বাহিরের শিক্ষা নিয়ে পরীক্ষা দেয়ায়। তিনি আরও বলেন, পর পর দুই বছরে এই বিদ্যালয় থেকে কেউ পাস করতে না পারায় ডিমলা এলাকার নাম খারাপ হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকতার হাবিব সরকারের দেখা পাওয়া যায় না। এমনকি তার মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে সাংবাদিকরা শত চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পায়নি।
তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সুত্র বলছে, গতবারের ন্যায় এবারও এ বিদ্যালয়ে কেউ পাস করতে পারেনি।
তাহমিন হক ববি/রাকিব