
ছবি: সংগৃহীত
মুম্বাইয়ের দক্ষিণে এক নির্জন গলিতে অবস্থিত ‘ফ্রামজি দাদাভয় আলপাইওয়ালা জাদুঘর’ যেন পারসি জাতিগোষ্ঠীর ইতিহাস ও সংস্কৃতির জীবন্ত দলিল। সম্প্রতি এই জাদুঘরটির আধুনিকায়ন শেষে দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে পারসিদের ধর্ম, বাণিজ্য, শিল্প ও দৈনন্দিন জীবনের দুর্লভ দলিল-দস্তাবেজ, পোশাক-আশাক ও নানাবিধ নিদর্শন তুলে ধরা হয়েছে।
মাত্র ৫০–৬০ হাজার সদস্যবিশিষ্ট এই পারসি সম্প্রদায় মূলত জরাথুস্ত্রী ধর্মাবলম্বী। তারা প্রাচীন পারস্য থেকে ৮ম থেকে ১০ম শতাব্দীতে ও পরে ঊনবিংশ শতকে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারতে আসে। জাদুঘরে সেই অভিবাসনের মানচিত্র ও নিদর্শন রয়েছে।
বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে কিউনিফর্ম লিপিতে লেখা ‘সাইরাস সিলিন্ডার’-এর প্রতিরূপ, যাকে বিশ্বের প্রথম মানবাধিকার সনদ বলা হয়। পাশাপাশি আছে চীন ও ইউরোপীয় প্রভাবযুক্ত ঐতিহ্যবাহী পারসি গারারা শাড়ি, যেগুলো ১৯শ শতকের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পারসিদের সম্পৃক্ততার সাক্ষ্য বহন করে।
এছাড়াও জাদুঘরে রয়েছে অগ্নিমন্দির ও ‘টাওয়ার অব সাইলেন্স’-এর প্রতিরূপ। পারসিদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মৃতদেহ দাহ বা কবর না দিয়ে প্রকৃতিতে সমর্পণ করা হয়—যা বাইরের জগতে রহস্যঘেরা এক প্রথা। এই জাদুঘর সে রহস্যের দ্বার খুলে দিয়েছে দর্শকদের জন্য।
জাদুঘরে স্থান পেয়েছে জমসেতজি টাটা, পারসি শিল্পপতি ও টাটা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতার আসবাবপত্র ও প্রতিকৃতি।কিউরেটর কেরম্যান ফাতাকিয়া বলেন, “এটি ছোট জাদুঘর হলেও ইতিহাসে পরিপূর্ণ।”
১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘর এখন আধুনিক আলোকসজ্জায় নতুন রূপ পেয়েছে। প্রতিটি দর্শনার্থী পান গাইডেড ট্যুর। মুম্বাইবাসী তো বটেই, বিশ্বের যে কোনো মানুষ এখানে এসে পারসি সমাজকে জানতে পারেন।”
মুমু