
ছবি: সংগৃহীত।
মানসিক রোগ মানেই পাগলামি নয়। এটি হতে পারে চাপ, দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, ঘুমের সমস্যা কিংবা আচরণগত অস্বাভাবিকতার একটি পর্যায়। কিন্তু আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্যের সংকেতগুলোকে অবহেলা করা হয় কিংবা লজ্জা-ভয়ে গোপন রাখা হয়। ফলে রোগটি গভীর হয়ে ওঠে এবং ব্যক্তি একাকিত্ব ও দুর্বলতার মধ্যে ডুবে যেতে থাকেন। তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ হলো—প্রাথমিক পর্যায়ে কীভাবে বোঝা যাবে কেউ মানসিক রোগে আক্রান্ত কিনা।
চলুন জেনে নিই এমন কিছু লক্ষণ ও আচরণ, যেগুলো দেখলেই সচেতন হওয়া উচিত।
১. আচরণে হঠাৎ পরিবর্তন
যে ব্যক্তি সবসময় প্রাণবন্ত ছিল, সে হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যাওয়া বা একেবারে বিপরীত আচরণ শুরু করলে সেটি হতে পারে মানসিক সমস্যার প্রথম সংকেত।
২. ঘুম ও খাওয়ার অভ্যাসে পরিবর্তন
অতিরিক্ত ঘুমানো বা একেবারে ঘুম না হওয়া, অতিরিক্ত খাওয়া বা ক্ষুধামান্দ্য—এগুলো মানসিক অস্থিরতার স্পষ্ট লক্ষণ হতে পারে।
৩. কথাবার্তায় হতাশা বা মৃত্যুচিন্তা
যদি কেউ প্রায়ই বলে “সবকিছু শেষ”, “আমার বাঁচার ইচ্ছা নেই”, বা “আমি কিছুই পারি না”—তাহলে তা মানসিক অবসাদের গোপন চিহ্ন হতে পারে।
৪. একাকিত্ব ও সমাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া
বন্ধু, পরিবার বা সামাজিক মেলামেশা থেকে হঠাৎ করে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া মানসিক অবসাদের বড় লক্ষণ।
৫. অতিরিক্ত রাগ বা আবেগপ্রবণতা
খুব ছোট বিষয়েও চিৎকার করা, হিংস্র হওয়া বা কান্নায় ভেঙে পড়া—এগুলো মানসিক ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ হতে পারে।
৬. কাজ বা পড়াশোনায় আগ্রহ হারানো
যে কাজ আগে খুব আগ্রহ নিয়ে করতেন, এখন যদি সেটি করতে ইচ্ছা না করে বা মনোযোগ ধরে রাখতে কষ্ট হয়—তবে সেটিও মানসিক সমস্যার লক্ষণ।
৭. শারীরিক উপসর্গ যাদের কারণ মেলে না
বুকে চাপ, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, হজমের সমস্যা—যার পেছনে কোনো শারীরিক রোগ না থাকলেও মানসিক চাপ থেকে এগুলো তৈরি হতে পারে।
মানসিক রোগ লুকিয়ে রাখার নয়—বরং বোঝার, সহমর্মিতা দেখানোর এবং চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়। আপনি যদি নিজের মধ্যে বা কাছের কারও মধ্যে উপরের লক্ষণগুলো দেখতে পান, তাহলে অবহেলা না করে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। কারণ, মনের যত্নই জীবনের মূল চাবিকাঠি।
নুসরাত