ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

 মোরসালিন মিজান

প্রকাশিত: ০১:০৩, ২৬ মে ২০২৩; আপডেট: ০১:০৪, ২৬ মে ২০২৩

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

কয়েকদিন ধরেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বিভিন্ন স্থানে পানি জমছে। এই জমে থাকা পানিতেই জন্ম নিচ্ছে মশা। বাড়ছে ডেঙ্গু। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে তোলা

ঢাকায় মোটামুটি বৃষ্টি হচ্ছে এখন। গ্রীষ্মের গরম থেকে বাঁচতে এই বারিধারার প্রয়োজন ছিল বৈকি। টানা বৃষ্টিতে গরম কমেছে। কিন্তু অন্যদিকে বেড়েছে মশার উৎপাত। বর্তমানে এখানে ওখানে বৃষ্টির পানি। জলাবদ্ধতা। ফলে বর্ষার আগেই অনুকূল পরিবেশ পেয়ে গেছে এডিস মশা। কয়েকদিনের জমা পানি এডিস মশার প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশার কামড়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখন অস্থির। কিছুদিন ধরে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমের প্রতিবেদন বলছে, গত ১ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত রাজধানীর সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৪২ ডেঙ্গু রোগী। এ সময়ের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮৮৪ জন। সর্বশেষ তথ্য,  বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪১ জন। মনে রাখতে হবে, এগুলো হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা তথ্য। কিন্তু সব রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন না।

বাসায় থেকেও সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকে। ফলে বাস্তবে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও অনেক বেশি হওয়ার কথা। বর্ষায় অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। কিন্তু ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন কী করছে? না, তা পরিষ্কার নয়। কারণ, কিছুদিন আগে উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম মশা নিধনে তার নেওয়া পদক্ষেপে ভুল ছিল বলে স্বীকার করেছেন। নতুন টেকনিকটি কী, তাও এখনো পরিষ্কার হয়নি নগরবাসীর কাছে। আর দক্ষিণের মেয়র ফজলে নূর তাপস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করেননি। ফলে মশা নিধন ইস্যুতে কী হচ্ছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। আবার এখনই এডিস নিধনসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া না হলে বিপদ বাড়বে। দুই মেয়র কি সে পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন?

নজরুল পুনর্পাঠ ॥ বাঙালির পাঠাভ্যাস অনেক কমেছে। গভীর চর্চায় মন নেই। তরুণ প্রজন্মের একটি অংশ স্থ’ূল বিষয় নিয়ে পড়ে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কিন্তু বৃহস্পতিবারের ছবিটা, বলা চলে, আলাদাই ছিল। এদিন বড় অংশটির চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছিলেন নজরুল। ঢাকায় দিনের সূচনাই করা হয় কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে। সকাল সকাল কত মানুষ যে সমবেত হয়েছিলেন সেখানে! বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষের উপস্থিতিতে কবরের নির্জনতা ভেঙে খান খান হয়ে গিয়েছিল। তরতাজা ফুলে, গানে, কবিতায় সর্বস্তরের মানুষ নজরুলকে শ্রদ্ধা ভালোবাসা জানান। পরে ছায়ানট, শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এসব আয়োজনে প্রাধান্য পায় কবির সৃষ্টি সম্ভার। ফলে একেবারে সাধারণ শ্রোতা বা দর্শকও নজরুলের সৃষ্টির জগৎ সম্পর্কে জানার সুযোগ পান। তবে প্রিয় কবির ছবি, তাঁর লেখা গান বা কবিতার পঙ্ক্তি, প্রতিনিয়ত তুলে ধরতে দেখা গেছে ফেসবুক। সামাজিক এ যোগাযোগ মাধ্যমে তরুণরাই বেশি সক্রিয় থাকেন। চটুল বিষয় নিয়ে মাতামাতিও বেশি করেন তারা। সেই তারাই নজরুলের বিদ্রোহ-বিপ্লবের কবিতা পোস্ট করেছেন। কবির সাম্য ও মানবতার বাণী প্রচার করেছেন। কেউ শেয়ার করেছেন, ‘যে জাত-ধর্ম ঠুন্কো এত,/আজ নয় কাল ভাঙ্গবে সে ত,/ যাক্ না সে জাত জাহান্নামে, রইবে মানুষ, নাই পরোয়া।’ কেউ শেয়ার করেছেন ‘বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর/অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ এভাবে নজরুল পাঠে, পুনর্পাঠে গোটা একটা দিন কেটেছে। এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? আগামী দিনগুলোতেও এমন চর্চা অব্যাহত থাকুক।

 

×