
অপরূপ নীল আকাশে শরতের আগমন
এবার অদ্ভুত এক বর্ষা দেখল বাঙালী। বর্ষা অথচ বৃষ্টির দেখা নেই। কড়া রোদ। ভীষণ খরা। মোটামুটি এভাবেই কেটে গেল দুটো মাস। আষাঢ়ে শুরু হয়েছিল বর্ষা। আর এখন শ্রাবণের বিদায় বেলা। বৃষ্টিহীন আকাশে নীল রং। সাদা মেঘের ভেলা ভেসে বেড়াচ্ছে। দেখে বোঝা যায়, শরতের আগমনী। আগেভাগেই রাজধানীর আকাশ দখলে নিয়েছে প্রিয় ঋতু। আসছে যে, সেই বার্তা দিয়ে চলেছে।
বর্ষা তো বিরূপ চেহারা দেখিয়ে বিদায় নিচ্ছে, শরতটা কেমন হবে এবার? ভাবতে শুরু করেছে ঢাকাবাসী। সাধারণত শরত মানেই স্বচ্ছ সুন্দর আকাশ। এ সময় শিউলি ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ নাকে এসে লাগে। মুহূর্তেই ভাল হয়ে যায় মন। একই ঋতু তালপাকা গরমের। ভাদ্র মাসটা বেশ ভোগায়। এবারও কি তাই হবে? নাকি শ্রাবণের বৃষ্টি ঠিক ঝরবে শরতে? রাজধানী ঢাকা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করে আছে। শরতের আকাশপানে তাকিয়ে বৃষ্টির জন্য প্রত্যাশা অদ্ভুত। তবে বাস্তবতা এটাই।
আগস্টের শোক সর্বত্র ॥ ১৫ আগস্ট একেবারে দ্বারপ্রান্তে। ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির পিতাকে চিরতরে হারিয়েছিল বাঙালী। একদল বিশ্বাসঘাতকের হাতে সপরিবারে নিহত হয়েছিলেন শেখ মুজিব। সেই বেদনা আজও বয়ে চলেছে বাংলাদেশের মানুষ। বিশেষ করে আগস্টে কষ্টগুলো নানা ভাব ও ভাষায় প্রকাশিত হতে থাকে। আলোচনা, গান-নাচ, কবিতা-সাহিত্য নানা মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় পিতা হারানোর যন্ত্রণা। তাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানানো হয়।
এবারও রাজধানীতে এমন বেশ কিছু অনুষ্ঠান চলমান রয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজন করেছে বিশেষ আলোচনার। ১০ দিনব্যাপী আলোচনার শিরোনাম ‘শোক থেকে শক্তি, শক্তি থেকে জাগরণ, জাগরণ থেকে সোনার বাংলা।’ বৃহস্পতিবার আবুল কাসেম প্রণীত ‘বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়নদর্শন জাতীয়করণনীতি এবং প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা’ গ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন।
সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে বঙ্গবন্ধু দূরদর্শী অর্থনৈতিক পরিকল্পনাসমূহ গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বিস্ময়কর সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির মৌলিক উপাদানগুলো কিভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে প্রয়োগের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, তা এই গ্রন্থের লেখক বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, ১৯৭২-১৯৭৫ সালের মধ্যে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে বঙ্গবন্ধু কতটা উচ্চাতায় তুলে এনেছিলেন এবং তিনি বেঁচে থাকলে আরও কত দূর এগিয়ে নিয়ে যেতেন, তারই একটি পূর্ণাঙ্গ আকরগ্রন্থ আবুল কাসেমের ‘বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়নদর্শন।’
আধুনিক বাস টার্মিনালের স্বপ্ন ॥ আগামী বছরের মার্চের মধ্যে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল আধুনিকায়নের কাজ শেষ হবে। এমন স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। গত বুধবার তিনি জানান, ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনালটি আধুনিক করা হচ্ছে। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল অনেক আগে নির্মাণ হলেও দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এটি ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। জলাবদ্ধতাসহ অবকাঠামোগত নানা সমস্যা রয়েছে।
এ অবস্থায় এটি আধুনিক করতে কার্যক্রম হাতে নেয় সিটি কর্পোরেশন। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আমরা দুটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একটি কাঁচপুরে ও আরেকটি কেরানীগঞ্জে। একটির জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আমরা সেটির হস্তান্তর চেয়েছি। আরেকটির জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এগুলো শেষ করতে ৩-৪ বছর সময় লাগবে। এ সময়ের মধ্যে এখানে বাসগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে, সে জন্য এর আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। যদি কথামতো কাজ হয়, তাহলে সত্যি আধুনিক বাস টার্মিনাল পাবে ঢাকাবাসী। আপাতত অপেক্ষা।