ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

অভিবাসন অভিযাত্রার করুণ আর্তনাদ

প্রকাশিত: ২১:২৬, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২

অভিবাসন অভিযাত্রার করুণ আর্তনাদ

এটি সর্বজনবিদিত যে, সুদূর অতীতকাল থেকে চলমান ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর চার দশকে ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজে কাজ করার কল্যাণে বাংলাদেশীদের জন্য অভিবাসনের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হয়। কালের পরিবর্তনে অভিবাসন প্রক্রিয়া ভিন্ন দিকে প্রসারিত হয়ে উন্নত জীবন-জীবিকার উচ্চাকাক্সক্ষায় বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের প্রবহমান স্রোত বেগবান হয়ে ওঠে। মুক্তির মহানায়ক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রসারমানতায় মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার শ্রমবাজারের দ্বার উন্মুক্ত হওয়ায় অভিবাসন প্রক্রিয়া প্রাতিষ্ঠানিক পূর্ণতা পায়। বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রফতানির অধিকাংশই মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল হলেও সময়ের পরিক্রমায় বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশীদের জন্য শ্রমবাজার হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইতোপূর্বে বাংলাদেশীদের দখলে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা তেমন সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। অধিকন্তু বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা, অভ্যন্তরীণ সহিংস পরিস্থিতিতে অনেকটা বাধ্য হয়ে বহু অভিবাসীকে দেশে ফেরত আসতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিল্স) অভিবাসী শ্রমিকের অবস্থা বিষয়ক প্রতিবেদন ২০১৯ সূত্রমতে, বিশ্বের ষষ্ঠ শ্রমিক রফতানিকারক দেশ হিসেবে ১৭৩টি দেশে বাংলাদেশের এক কোটি ২০ লাখের অধিক মানুষ অভিবাসী হিসেবে কর্মরত রয়েছে। সবচেয়ে বেশি অভিবাসী শ্রমিক রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে, যার সংখ্যা প্রায় ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার। এর পরে আরব আমিরাতে অবস্থান করছে প্রায় ২৩ লাখ ৭০ হাজার অভিবাসী শ্রমিক। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রাণালয়ের তথ্যানুসারে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ৭ লাখ ১ হাজার বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিক কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ গমন করেছে। তন্মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যা ১ লাখ ১১ হাজার। যাদের মধ্যে ৪৪ শতাংশ ছিল দক্ষ ও ২০ শতাংশ ছিল অদক্ষ। গমনকারী দেশের বিবেচনায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩ লাখ ৯৯ হাজার গমন করেছে সৌদি আরবে। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ওমান (৭২ হাজার ৬৫৪), কাতার (৫০ হাজার ২৯২) ও সিঙ্গাপুর (৪৯ হাজার ৮২৯)। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার কিছুটা সঙ্কুচিত হয়ে আসায় দেশের শ্রম অভিবাসন প্রত্যাশীরা ভ্যাগ্যবদলে অনেকেই অবৈধভাবে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে জীবন ঝুঁকির বিনিময়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বিপজ্জনকভাবে ইউরোপে যাওয়ার পথে এসব মানুষের অনেকের ভূমধ্যসাগরে সলিল সমাধি ঘটে। ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ইউরোপ যাত্রায় ভূমধ্যসাগরের রুটটি বাংলাদেশীরাই বেশি ব্যবহার করে থাকে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত ৭ হাজার ৪১৮ জন অভিবাসী ও শরণার্থী সমুদ্রপথে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছলেও যাত্রাপথে মোট প্রাণ হারায় অন্তত ২৫০ জন। অভিবাসন নিয়ে কাজ করা স্প্যানিশ এনজিও ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাসের (ওয়াকিং বর্ডারস) প্রতিবেদনে মৃত মানুষের এ সংখ্যা আইওএমের অনুমানের চেয়ে ৮ গুণ বেশি হতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে। এমনকি ডুবে যাওয়া অভিবাসী বোঝাই অনেক নৌকার হদিস পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ইউরোপের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে গঠিত ‘ফ্রনটেক্স’-এর প্রতিবেদন ২০২১ সালের নবেম্বর পর্যন্ত ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৮০ জন অভিবাসী অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করার সংবাদ প্রকাশ করেছে। এ সংখ্যা করোনা মহামারী শুরুর আগের সময়ের তুলনায় প্রায় ৬০ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি। ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশের ক্ষেত্রে অভিবাসীদের পছন্দের রুট হচ্ছে ভূমধ্যসাগরীয় রুট, যেটিকে ‘ফ্রনটেক্স’ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। নবেম্বর ২০২১ পর্যন্ত রুটটি ব্যবহার করে প্রায় ৬৪ হাজার ৪০০ জন অবৈধ অভিবাসী ইউরোপে প্রবেশ করে, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৮৯ শতাংশ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় ৩৮০ শতাংশ। এই পথ ব্যবহারকারীদের মধ্যে শীর্ষে আছে তিউনেশিয়া, মিসরীয় ও বাংলাদেশীরা। মূল গন্তব্য ইতালি যাওয়ার জন্য বাংলাদেশীরা মূলত লিবিয়া থেকে এ পথ ব্যবহার করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়। ২১ জুন ২০২১ প্রাণ বিসর্জনের প্রস্তুতি নিয়ে লিবিয়া থেকে সাগরপথে ইতালি যাওয়ার প্রাক্কালে নৌকাডুবিতে ১৭ বাংলাদেশী প্রাণ হারায়। ঐ সময় তিউনিশিয়ার কোস্টগার্ড ভূমধ্যসাগর থেকে বাংলাদেশীসহ ৩৮০ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। এছাড়াও ২৪ জুন ২০২১ তারিখে উদ্ধার হওয়া ২৬৭ জনের মধ্যে ২৬৪ জনই বাংলাদেশী। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্য অনুযায়ী ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের মোট ২২ লাখ ২৪ হাজার ২৪৫ জন অভিবাসী সাগরপথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপ প্রবেশ করেছে এবং নৌকাডুবিসহ নানা কারণে প্রাণ হারিয়েছে ২১ হাজার ৭০৭ জন। ব্র্যাকের গবেষণায় প্রতিফলিত হয়েছে বাংলাদেশের ২৬ থেকে ৪০ বছর বয়সী লোকজন সবচেয়ে বেশি ইউরোপ ঢোকার চেষ্টা করেছে। তাদের মধ্যে ৩১ থেকে ৩৫ বছরের লোকই বেশি। ফ্রনটেক্সের অপর প্রতিবেদন সূত্রে শরণার্থী-অভিবাসীদের সবচেয়ে পছন্দের গন্তব্য জার্মানি, সুইডেন ও ব্রিটেন। এরপর রয়েছে ফ্রান্স, ইতালি, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড ইত্যাদি। ইউরোপ অভিমুখে শরণার্থীদের ঠেলে দিতে সুসংগঠিত আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্র প্রধান ভূমিকা রাখছে বলে তাদের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ স্রোত নামার প্রধান কারণ হচ্ছে সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্য ও আরব দেশগুলোর যুদ্ধবিগ্রহ এবং জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান। দ্বিতীয় প্রধান কারণ- এশিয়া ও আফ্রিকান দেশগুলোর অতিদরিদ্র, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিশ্চিত জীবিকার আকাক্সক্ষা বা জীবনমান উন্নয়ন অভিলাষ। ইউএনএইচসিআর-এর তথ্যমতে প্রায় প্রতি বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অন্ততপক্ষে ৮ লাখ ৫০ হাজার জনগণ শরণার্থী হিসেবে ইউরোপে প্রবেশ করে। আফ্রিকা থেকে ইউরোপে আশ্রয়ের জন্য প্রতি বছর আবেদন করে লাখ লাখ মানুষ। আগামী বছরগুলোতে আবেদনের সংখ্যা বেড়ে দেড়গুণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। জাতিসংঘ ইউরোপে চলমান অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) আরও উদার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটির মতে শরণার্থীদের সিংহভাগই যুদ্ধবিধ্বস্ত ও সংঘাতময় দেশগুলো থেকে আসছে। তাদের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এখানে কোন প্রকার বৈষম্যের সুযোগ নেই। ইউরোপের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেও প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মেক্সিকোর পাবলিক সিকিউরিটি সেক্রেটারি আল্ডো ফাসি বলেন, দালালরা বিভিন্নভাবে আমেরিকায় লোক পাচার করছে। গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ থেকে কমপক্ষে ৭০০ নারী পাচার হয়ে কাতার, কুয়েত, ব্রাজিল ও মেক্সিকোতে অবস্থান করে কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘মেক্সিকোর গভীর জঙ্গল ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানায় আসার পথে অনেকেই নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেকে খাবারের অভাবে হাঁটতে পারে না। সে সময় দল থেকে ছিটকে পড়ে। আবার কেউ কোনমতে সীমান্ত এলাকায় আসার পর রক্ষীদের দৃষ্টি এড়িয়ে নদী সাঁতরে টেক্সাসে প্রবেশের চেষ্টাকালে পানির ¯্রােতে হারিয়ে যায়।’ ভুক্তভোগীদের আত্মীয়স্বজন এবং সহযাত্রীদের বিবরণ থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুসারে গত চার বছরে চার হাজারের বেশি নিখোঁজ-নিহত হয়েছে, যা পূর্বের তুলনায় ১ হাজার ৫৭৩ জন বেশি। আর সারাবিশ্বে নিহত-নিখোঁজ হয়েছে মোট ৫৬ হাজার মানুষ। জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) প্রতিবেদনে অভিবাসীদের চরম দুর্দশার উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ পায়। সংস্থাটির মতে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে প্রায় ২৮ হাজার ৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বেআইনী পথে দেশত্যাগের সময়। সম্প্রতি সেন্ট্রাল আমেরিকার দেশগুলো থেকে হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষের মিছিল মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে এসেছে। তারা ঢোকার সুযোগ পাচ্ছে না। এসব মানুষের মিছিলে বাংলাদেশীরাও রয়েছে বলে মেক্সিকো থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী যুবকরাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্গম পথে পা বাড়াচ্ছেন। অতীত, নিকট অতীত ও সম্প্রতি প্রকাশিত গণমাধ্যম পর্যালোচনায় অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষের নির্মম দৃশ্যাদৃশ্যের অবলোকন যারপরনাই হতাশাব্যঞ্জক। ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ গ্রিসের দক্ষিণাঞ্চলের কাছে অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে কমপক্ষে ৩০ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৯০ জনকে। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ৫২ জন পুরুষ, ১১ নারী ও ২৭ শিশু রয়েছে। তিউনেশিয়ার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মতে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে নিহত ৪৩ জন অভিবাসীর মধ্যে বেশিরভাগই ছিল বাংলাদেশী নাগরিক। লিবিয়া ও তিউনিশিয়া কোস্টগার্ড জুন ও জুলাই মাসে ডুবে যাওয়া বিভিন্ন নৌকা থেকে অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সঙ্গে ৮ শতাধিক বাংলাদেশীকে উদ্ধার করেছে। তিউনিশিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে এপ্রিলে ৪০ জনের বেশি এবং মার্চে মৃত্যু হয় ৩৯ জনের। ২০২০ সালের জুনে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৬০ জনের। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ২০১৭ সালের জরিপে দেখা যায়, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি ঢোকার চেষ্টাকারী প্রথম পাঁচটি দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশীরাও। ইউএনএইচসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপ প্রবেশকারী শীর্ষ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে সিরিয়া, নাইজিরিয়া, গায়ানা, আইভরিকোস্ট, মরক্কো, ইরাক, আলজিরিয়া, ইরিত্রিয়া এবং গাম্বিয়া। সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম কর্তৃক তরুণ সমাজের ওপর পরিচালিত জরিপের ফলাফলে জানা যায়, আরও ভাল জীবনযাপন এবং পেশার উন্নতির জন্য বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৮২ শাতংশ তরুণই নিজের দেশ ছেড়ে চলে যেতে চায়। এসব তরুণ মনে করে না যে, নিজের দেশে তাদের ভবিষ্যত আছে। এছাড়াও বাংলাদেশীদের মধ্যে বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন অতিমাত্রায় প্রতিফলিত। তারা মনে করে বিদেশে গেলে ভাগ্য বদলে যাবে। অভিবাসন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় লাখ লাখ অভিবাসীকে চরম দুর্ভোগে নিপতিত করে। কর্তৃপক্ষ সঠিক কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে অভিবাসন কার্যক্রম পরিচালনা করলে দেশের কোন আভিবাসীরই বিপাকে পড়ার সম্ভাবনা থাকে না। এটি শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের সব দেশেরই অভিন্ন চিত্র। তবে উন্নত দেশগুলোর অভিবাসন প্রক্রিয়া যথেষ্ট স্বচ্ছ হওয়ায় তাদের অভিবাসন নিয়ে তেমন কোন সমস্যার উদ্ভব হয় না। দেশে অভিবাসীদের প্রতি যথাযথ নজর না দেয়ায় বিভিন্ন দেশে আমাদের অভিবাসীরা নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। এই সমস্যার উত্তরণ ঘটাতে না পারলে ভবিষ্যতে এ খাতে ব্যাপক বিপর্যয়ের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোপরি নানামুখী কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় বৈধ পন্থায় লোকবল সঙ্কটে বিপর্যস্ত দেশসমূহে আমাদের দেশ থেকে জনশক্তি রফতানির অধিকতর কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান করতে হবে। অন্যথায় অবৈধ পথেই প্রাণহানির ঝুঁকি নিয়ে বেকার-কর্মসংস্থানের প্রত্যাশিত ভরসায় অভিবাসন ঠেকানো দুরূহ রূপ পরিগ্রহ করবে। লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
×