আনোয়ারা সংবাদদাতা ॥ কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের জন্য চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম। উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়নের ভরাশঙ্খ খালে ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এই ড্যামের মাধ্যমে উজান থেকে শিকলবাহা খাল হয়ে আসা মিঠা পানি সংরক্ষণ ও ভাটিতে সাগর থেকে শঙ্খ হয়ে আসা লোনাপানির অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করে ফসল রক্ষা করা সম্ভব হবে। কিন্তু সেচ সুবিধা সম্প্রসারণসহ কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথা থাকলেও উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় স্লুইস গেট এবং বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের কারণে এলিভেটর ড্যামের উল্লেখযোগ্য সুফল মিলছে না বলে জানিয়েছেন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা।
উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ড্যামটি নির্মাণের ফলে উপজেলার বরুমচড়া, বারখাইন, হাইলধর, বটতলী, চাতরী ও সদর ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণসহ প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ টন বাড়তি ফসল উৎপাদন হওয়ার কথা। এছাড়া শুকনো মৌসুমে (জানুয়ারি থেকে মে মাসে) জোয়ারের সঙ্গে উঠে আসা লোনা পানির প্রভাব থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার এলাকার ফসল ও গাছপালা রক্ষা করা সম্ভব হবে এবং উপজেলায় কৃষি উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হবে, এমন ধারণা থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। কিন্তু মুরালি খালের মাঝখানে বেড়িবাঁধ এবং স্লুইস গেটের দরজা বন্ধের কারণে পর্যাপ্ত পানি প্রবেশ করতে পারছে না, যার কারণে ড্যামের সুফল পাচ্ছে না কৃষকরা।
জানতে চাইলে এলিভেটর ড্যামের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজমানুর বলেন, যে ভরাশঙ্খ খালে ড্যামটি নির্মাণ করা হয়েছে সেই খালটির উৎস মুরালী খাল। একদিক দিয়ে আসত মিঠা পানি, আর বিপরীত দিক দিয়ে বঙ্গোপসাগর ও সাঙ্গু নদী থেকে আসত লোনা পানি। তাই ড্যামটির টার্গেট হয়েছিল লোনা পানি আটকে দেয়া আর মিঠা পানি সংরক্ষণ করা। উপজেলার উত্তরপাশে কৈখাইন নয়া রাস্তার মাথায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ দেয়া হয়েছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার ভয়ে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) পানি ছাড়েনি, যার কারণে মিঠা পানি ভরাশঙ্খ খালে পৌঁছতে পারছে না। তাই চাষাবাদে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু এবার ইউএনও একটা কমিটি করেছেন, যার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে সময় সময় স্লুইস গেট খুলে পানি আসার ব্যবস্থা করে দেয়ার। মিঠা পানি পাওয়া গেলে চাষাবাদ বৃদ্ধি পাবে।