ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিয়ের পিড়িতে দুই হাত হারানো ফাল্গুনী

প্রকাশিত: ১৩:৩৭, ৩ ডিসেম্বর ২০২১

বিয়ের পিড়িতে দুই হাত হারানো ফাল্গুনী

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ অবশেষে জীবনের বাকিটা সময় স্বামীর সংসারে সুখের খোঁজে বিয়ের পিড়িতে বসেছেন শিশুকালে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় দুই হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ফাল্গুনী সাহা। বর সুব্রত মিত্র ছোট বেলা থেকেই পরিচিত, তবে তাদের সাথে বিগত পাঁচ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো। সেই প্রেমের সম্পর্ক থেকেই সাত পাকে বাঁধা পরলেন ফাল্গুনী ও সুব্রত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুব্রত মিত্র পটুয়াখালীতে বেসরকারী সংস্থা কোডেক এর ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি দুই হাত হারা ফাল্গুনী বরিশাল ব্র্যাক অফিসে সহকারী এইচআর পদে কর্মরত রয়েছেন। দুইজনের বাড়ি গলাচিপাতে হলেও ফাল্গুনী নগরীর বিএম কলেজ সংলগ্ন ইন্দোবাংলা ফার্মাসিউটিক্যালের সামনে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। জগদীশ চন্দ্র সাহার মেয়ে ফাল্গুনী সাহা বলেন, ২০০২ সালে গলাচিপায় আমাদের পাশের বাড়ির ছাদে বসে বৈদ্যুতিক তারে দুর্ঘটনার কারণে দুই হাতই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে আমি নিজেকে কখনো দুর্বল মনে করিনি। দুই হাতের যতটুকু অংশ ছিলো, ততটুকু দিয়েই আমি পড়াশুনা শেষ করে এখন চাকরি করছি। তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালে গলাচিপা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ২০১৩ সালে উত্তরা ট্রাস্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছি। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিওলোজি ও এনভায়রনমেন্ট সাবজেক্টে ২০১৮ সালে অনার্স ও পরে মাস্টার্স শেষ করে চাকরি জীবনে প্রবেশ করেছি। ফাল্গুনী সাহা বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় দৃষ্টিভঙ্গি আর মানসিকতা ঠিক থাকলে প্রতিবন্ধকতা কোনো বিষয়ই নয়। আমাদের বিয়ের বিষয়টি দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মনে করছি। বর সুব্রত মিত্র বলেন, ফাল্গুনীর দুই হাত নেই এটা আমার কাছে কোনো সমস্যা মনে হয়নি। একটা মানুষের হাত নেই বলে কি তিনি বিয়ে করতে পারবে না, তার পরিবার হবে না, এমনটা হতে পারে না। আমরা সামনের দিনে যেন ভালো থাকতে পারি, এজন্য সবাই আমাদের জন্য আশীর্বাদ করবেন। সুব্রত মিত্রর ছোট বোন শ্রাবন্তী বলেন, অন্য বিয়েগুলো যেমন হয়, এখানেও তার কোন কমতি ছিলোনা। বরং অন্য বিয়ের চেয়ে এই বিয়ে ভালো ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
×