ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাট রফতানিতে ১০৩ কোটি ডলার আয়

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ৫ মে ২০২১

পাট রফতানিতে ১০৩ কোটি ডলার আয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মহামারী করোনাভাইরাসের মধ্যেই পাট রফতানিতে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসেই (জুলাই-এপ্রিল) পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে ১০৩ কোটি ৫৭ লাখ (১.০৩ বিলিয়ন) ডলার আয় হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই পুরো অর্থবছরেও এই খাত থেকে এত বেশি বিদেশী মুদ্রা দেশে আসেনি। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পাট ও পাটপণ্য রফতানি করে ১০২ কোটি ৫৫ লাখ (১.০২ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। ওই একবারই এ খাতের রফতানি এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রোববার রফতানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বিভিন্ন দেশে পাট ও পাটজাত দ্রব্য রফতানি করে ১০৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩১ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি এসেছে ৮.২ শতাংশ। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮৮ কোটি ২৩ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করে সঙ্কটে পড়া চামড়া খাতকে (৭৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলার) পেছনে ফেলে তৈরি পোশাকের পরের স্থান দখল করে নিয়েছে পাট খাত। মহামারির পর থেকে পাটপণ্য রফতানি বেড়ে যাওয়ার মধ্যে গত বছরের জুলাই মাসে সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকলে উৎপাদন বন্ধ করে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী শ্রমিককে অবসরে পাঠায়। বিজেএমসির আওতাধীন এই পাটকলগুলোতে উৎপাদিত চট, বস্তা, থলে বিদেশে রফতানি হতো। এরপরও এ খাতের রফতানি কমেনি; উল্টো বেড়েই চলেছে। রফতানিকারকরা আশা করছেন, অর্থবছর শেষে এবার পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে বিদেশি মুদ্রা আয় ১৩০ কোটি (১.৩ বিলিয়ন) ডলারের মাইলফলকে পৌঁছাবে। এই সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর অভাব অনুভব করছেন এই খাত সংশ্লিষ্টরা। চলতি অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি থেকে ১১৬ কোটি ৭০ লাখ আয় করার লক্ষ্য ধরেছে সরকার। ১০ মাসে অর্থাৎ জুলাই-এপ্রিল সময়ের লক্ষ্য ধরা ছিল ৯৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার। সেই লক্ষ্যের চেয়ে আয় বেড়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। গত অর্থবছর থেকেই বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যে চামড়াকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করে নিয়েছে পাট খাত। সামগ্রিকভাবে এই অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ মোট ৩ হাজার ২০৭ কোটি ডলার আয় করেছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮.৭৫ শতাংশ বেশি। খাতভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, এই ১০ মাসে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে পাট রফতানিতে। ইপিবির তথ্যে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে পাট সুতা (জুট ইয়ার্ন) রফতানি হয়েছে ৭১ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারের; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৩ দশমিক ২৯ শতাংশ। কাঁচা পাট রফতানি হয়েছে ১২ কোটি ১০ লাখ ডলারের। পাটের তৈরি বস্তা, চট ও থলে রফতানি হয়েছে ১২ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার ডলারের, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩১ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। পাট ও পাট সুতা দিয়ে হাতে তৈরি বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে আয় হয়েছে ৯ কোটি ৯৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ ছাড়া এই ১০ মাসে পাটের তৈরি অন্যান্য পণ্য রফতানি হয়েছে ৭ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার ডলারের। এ বিষয়ে বেসরকারী পাটকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান জাহিদ মিয়া বলেন, ‘এখন শুধু বস্তা, চট ও থলে নয়, পাটসুতাসহ পাটের তৈরি নানা ধরনের পণ্য বাংলাদেশ থেকে রফতানি হচ্ছে।’
×