ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

আনুশকার মৃত্যু বিকৃত যৌনাচারেই, যৌনাঙ্গ পায়ুপথে ইনজুরি

প্রকাশিত: ২২:৩০, ৯ জানুয়ারি ২০২১

আনুশকার মৃত্যু বিকৃত যৌনাচারেই, যৌনাঙ্গ পায়ুপথে ইনজুরি

আজাদ সুলায়মান ॥ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গ্রুপ স্টাডির কথা বলে ফাঁকা বাসায় ডেকে নেয়া হয় মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ও লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনকে (১৭)। তার সঙ্গে গল্প করার সময় নেশা মেশানো কোক পান করানো হয়। এ অবস্থায় ফারদিন ইফতেখার দিহান তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করায় দরুন প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে আরও তিন বন্ধুকে ডেকে এনে আনুশকাকে নিয়ে যাওয়া হয় ধানম-ির আনোয়ারা মেডিক্যালে। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। খবর পেয়ে অভিযুক্ত দিহানকে সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার করে কলাবাগান থানায় নেয়া হয়। তবে ঢাকা মেডিক্যালের ফরেনসিক চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন- বিকৃত যৌনাচারের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেছে। ডাঃ সোহেল বলেন, ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথে ইনজুরি পাওয়াা গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া শরীরের অন্য কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এদিকে রাতে নিহত আনুশকার বাবা বাদী হয়ে দিহানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কলাবাগানে তোলপাড় করা এ ঘটনায় রাতেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দিহান স্বীকার করে- সে একাই আনুশকাকে ধর্ষণ করে। অতিরিক্ত রক্তরক্ষণেই তার মৃত্যু ঘটে। পুলিশ শুক্রবার দুপুরে তাকে ঢাকার একটি আদালতে পাঠালে সেখানেও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করায় তাকে পাঠানো হয় কারাগারে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই আনুশকার মৃত্যু ঘটেছে। তবে তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে ময়নাতদন্তের পর। কলাবাগান থানার পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিকৃত যৌনাচারের দরুন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আনুশকা। আদালত সূত্রে জানা গেছে- এ ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত ফারদিন ইফতেখার দিহান (১৮)। সে তার প্রেমিকা আনুশকাকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। সেই সঙ্গে জানিয়েছে, পূর্বপরিকল্পিতভাবেই তাকে ধর্ষণের জন্য ফাঁকা বাসায় ডেকে নেয়া হয়। পুলিশের মতে- ধর্ষণের নায়ক ফারদিন ইফতেখার দিহান। আটকের পর বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষণ ও হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে। এ বিষয়ে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই অবচেতন ছিল আনুশকা। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে কলাবাগানের লেকসার্কাস রোডের যে বাসাতে ধর্ষণের শিকার হয় আনুশকা, সেখানেই তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। জিজ্ঞাসাবাদে দিহান পুলিশকে জানায়, ধর্ষণের পরিকল্পনা আগেই করা ছিল। বন্ধু হলেও দুজনের প্রেমের সম্পর্ক বেশিদিন হয়নি। মাত্র তিন মাস হলো উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়েছে। গ্রুপ স্টাডির নাম করে আনুশকাকে ফোন করে কলাবাগান লেকসার্কাসের বাসায় ডেকে নেয় দিহান। দুপুর ১২টা থেকে একটার মধ্যে জোরপূর্বক আনুশকাকে ধর্ষণ করে দিহান। দুপুর একটার দিকে আনুশকার রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর তাকে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে ধর্ষণকারী একজন নাকি চারজন সে বিষয়েও দিহান জানিয়েছে- সে একাই ধর্ষণ করেছে। অবস্থা বেগতিক দেখে খবর পেয়ে বাকিরা এসেছে। প্রথমেই পুলিশ দিহানকে গ্রেফতার দেখিয়েছে। বাকি তিনজনকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশের কাছেও দিহান স্বীকার করেছে- আনুশকাকে কোকজাতীয় পানীয়ের সঙ্গে অচেতন করার ওষুধ খাওয়ানো হয়। তবে ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়ে জানা যাবে। গতরাতেই তার মরদেহ নিয়ে যায় স্বজনরা। আনুশকা রাজধানীর ধানমন্ডি মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ও লেভেলের শিক্ষার্থী। দিহানও একই স্কুলের তার সহপাঠী। আনুশকার বাবা আল আমিন আহমেদ ও মা শাহানুরী । এক ভাই দুই বোনের মধ্যে সবার বড় আনুশকা। মাস্টারমাইন্ড স্কুলে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল সে। তাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার গোপালপুর। তার মা শাহানুরী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কম্পিউটার অপারেটর আর বাবা আল আমিন আহমেদ নবাবপুরের ব্যবসায়ী। তারা ধানমন্ডি-১৭ (নতুন) তে থাকেন। সকাল নয়টার দিকে মেয়েকে বাসায় রেখে দুজনই বের হয়ে যান। পরে বেলা ১১ টার দিকে মেয়ে তার মাকে ফোন করে জানায়, ক্লাসের নোট নেয়ার জন্য বাইরে বের হচ্ছে। তারপর পান তারা সেই দুঃসংবাদ। দুপুর একটার দিকে দিহান পরিচয় দিয়ে মেয়ের মাকে ফোন করে জানায়, আনুশকা তার বাড়িতে গিয়েছিল- এরপর সেখানে অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে আনোয়ার খান মর্ডান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর আনুশকার মা হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তারের কাছে জানতে পারেন ধর্ষণের দরুন রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। ফাঁকা বাসায় ঘটে সর্বনাশ ॥ ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ফারদিন ইফতেখার দিহান বৃহস্পতিবার দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে স্কুলছাত্রী আনুশকাকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ৬৩/৪ লেকসার্কাস ডলফিন গলি পান্থপথ কলাবাগানের ফাঁকা বাসায় তার সঙ্গে গল্পে শুরু করে। এক পর্যায়ে আনুশকাকে কোক পান করতে দেয়া হয়। এরপর তার ওপর চলে পাশবিক নির্যাতন। উপর্যুপরি ধর্ষণ। এতে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণের কারণে আনুশকা অচেতন পড়ে। তখন দিহান ধর্ষণের বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য তাকে নিয়ে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে যায়। সেখানে ভিকটিমের মৃত্যু হয়। সংবাদ পেয়ে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত হাসপাতালে যায়। খবর পেয়ে আনুশকার তিন বন্ধু হাসপাতালে গেলে পুলিশ তাদেরও আটক করে। পরে চারজনকে কলাবাগান থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এজাহারে যা বলা হয় ॥ চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর পরই মেয়েটির বাবা থানায় মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার রাতে কলাবাগান থানায় ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে নারী ও শিশুনির্যাতন দমন আইনের ৯-এর ২ ধারায় খুনসহ ধর্ষণ মামলা করেছেন মেয়েটির বাবা মোঃ আল আমিন। মামলায় শুধু ইফতেখার ফারদিন দিহানকেই এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। এজাহারে মেয়েটির বাবা বলেছেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় আমার স্ত্রী অফিসে এবং আমি সকাল সাড়ে ৯টায় ব্যবসার কাজে বের হয়ে যাই। পরে আমার মেয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় তার মাকে ফোন দিয়ে বলে সে কোচিংয়ের পেপার্স আনতে বাইরে যাচ্ছে। দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে দিহান আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলে আমার মেয়ে তার বাসায় গিয়েছিল। সেখানে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করিয়েছে। এ কথা শুনে আমার স্ত্রী দুপুর ১টা ৫২ মিনিটের দিকে হাসপাতালে পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে জানতে পারেন আমাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছে। পরে আমরা বিভিন্নভাবে জানতে পারি দিহান আমার মেয়েকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তার বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। পরে দিহান ফাঁকা বাসায় আমার মেয়েকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় অমানবিক কার্যকলাপ করায় আনুশকার গোপনাঙ্গ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে ধর্ষণের ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে দিহান চালাকি করে আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন। বিকৃত যৌনাচারেই মৃত্যু ॥ থানা ও আদালতে স্বীকারোক্তিতে দিহান জানিয়েছে, শুধু ধর্ষণের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই আনুশকা অচেতন হয়ে পড়ে। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত বা শ্বাসরোধ করা হয়নি। তবে হাসপাতালের ঢাকা মেডিক্যালের ফরেনসিক চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, বিকৃত যৌনাচারের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেছে আনুশকা। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত শেষে এ কথা জানান সোহেল মাহমুদ। তিনি বলেন, শারীরিক গঠন ও দাঁত দেখে বয়স নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া ডিএনএ ও ভিসেরা রিপোর্টের পরই বোঝা যাবে গ্যাং রেপ হয়েছে কিনা। ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে চেতনানাশক কিছু খাওয়ানো হয়েছে কিনা, তার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে কেমিক্যাল পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। এসব রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে। রিপোর্টের জন্য সপ্তাহ দুয়েক অপেক্ষা করতে হবে। এর আগে বয়স নির্ধারণের জন্য মরদেহের প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়। পরে স্বজনরা মরদেহ নিয়ে যান। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথে ইনজুরি রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সুরতহাল প্রতিবেদনে মেয়েটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। দিহানের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া আলামতে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখন এই মামলায় শুধু দিহানকেই গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আর বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়। তাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলো আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি। দিহান একাই ধর্ষক ॥ প্রশ্ন ওঠেছে- আনুশকাকে ফাঁকা বাসায় দিহান একাই ধর্ষণ করেছে নাকি তার অপর বন্ধুরাও জড়িত। এ বিষয়ে কলাবাগান থানার পুলিশ জানিয়েছে, শুধুই ধর্ষণের কারণেই তার মৃত্যু ঘটেছে নাকি এ ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করা হয়েছে তা ময়নাতদন্তেই জানা যাবে। যদিও এ হত্যাকা-ে আনুশকার বন্ধু ইফতেখার ফারদিন দিহান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী শেষে দিহানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। তোলপাড় হওয়া এ ঘটনায় নিহতের বাবার অভিযোগ- এটা পূর্বপরিকল্পিতও হতে পারে। শুক্রবার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামি দিহানকে আদালতে হাজির করে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণের জন্য আবেদন করেন। পরে দিহান স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। বৃহস্পতিবার রাতেই এ ঘটনায় কলাবাগান থানায় আনুশকার বাবা মোঃ আল আমিন বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় দিহানকে। দিহানের অকপট স্বীকারোক্তি ॥ এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলাবাগান থানার ওসি আ ফ ম আসাদুজ্জামান প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ৭ জানুয়ারি দুপুর ১২ টার দিকে ভিকটিমকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে কৌশলে বাসায় নিয়ে যায়। এরপর আসামি নিজের ফাঁকা বাসায় ভিকটিমকে একা পেয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। ভিকটিমকে ধর্ষণের সময় আসামির অমানবিক কার্যকলাপের কারণে ভিকটিমের যৌনাঙ্গ ফেটে প্রচুর পরিমাণ রক্তক্ষরণ হয়। ভিকটিম অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য তাকে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই সে মারা যায়। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি সত্য বলে প্রতীয়মান হয়। এছাড়া আসামি মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। জবানবন্দী রেকর্ড করার পর ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদ মামলার এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, এ মামলায় একমাত্র আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে রাজি হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদ তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন। যদিও এ ঘটনায় হাসপাতাল থেকে আটক দিহানের তিন বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তানভীর ইফতেখার দিহানকে আসামি করে ছাত্রীর বাবা ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেছেন। মামলাটির তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কলাবাগান থানায় ফোন করে জানায়, এক কিশোরীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এনেছেন এক তরুণ। কিশোরীর শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। খবর পেয়ে নিউমার্কেট অঞ্চল পুলিশের এসি আবুল হাসান ওই তরুণকে আটকে রাখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। এতে কলাবাগান থানার পুলিশ দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে ওই তরুণকে আটক করে। খবর পেয়ে দিহানের অপর তিন বন্ধু হাসপাতালে গেলে পুলিশ তাদেরও আটক করে। পরে চারজনকে কলাবাগান থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ আনুশকার মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
×